কাছাড়ের লোহার সেতু ভেঙে রেল-সড়ক অবরুদ্ধ, আগরতলা-গুয়াহাটি রুটে বিমান ভাড়া বৃদ্ধি, যাত্রীরা দিশেহারা
নিউজ ডেস্ক || আসামের কাছাড় জেলায় একটি লোহার সেতু ভেঙে পড়া এবং ডিমাহাসাও জেলার পাহাড়ি রেলপথ বিপর্যস্ত হওয়ায় রাজ্যের সড়ক ও রেল যোগাযোগ কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। ফলে, বহির্রাজ্যে যাতায়াতের জন্য মানুষ এখন সম্পূর্ণভাবে বিমানের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বিমান সংস্থাগুলি আগরতলা-গুয়াহাটি রুটে লাগামছাড়া ভাড়া আদায় করছে, যা যাত্রীদের জন্য চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার গুয়াহাটি থেকে আগরতলাগামী ইন্ডিগোর ১৮০ আসনের এয়ারবাসের সব টিকিট বিক্রি হয়ে যাওয়ায় বুধবার দুপুরের পর কেউই টিকিট পাননি। একই দিনে আকাশ এয়ারলাইন্সের ১৭২ আসনের একটি বোয়িং বিমান বেঙ্গালুরু থেকে গুয়াহাটি হয়ে আগরতলায় আসবে। এই বিমানের টিকিটের জন্য বুধবার সন্ধ্যায় যাত্রীদের প্রতি টিকিটে ১২,৮৭৫ টাকা গুনতে হয়েছে।
এ ছাড়া, গুয়াহাটি থেকে সরাসরি আগরতলায় আসার আর কোনও বিমান না থাকায় ইন্ডিগোর একটি ১৮০ আসনের বিমানে গুয়াহাটি থেকে কলকাতায় এসে বিমান পরিবর্তন করে আগরতলায় পৌঁছানোর সুযোগ রয়েছে। তবে, এই লিঙ্ক ফ্লাইটে প্রায় ২ ঘণ্টা ২৫ মিনিট কলকাতা বিমানবন্দরে অপেক্ষা করতে হয়। এই রুটে বুধবার সন্ধ্যায় টিকিট নেওয়া যাত্রীদের প্রতি টিকিটে ১০,৫৬৪ টাকা ভাড়া দিতে হয়েছে।
অন্যদিকে, আগরতলা থেকে গুয়াহাটিগামী বিমানের ভাড়াও ক্রমশ বাড়ছে। বুধবার সন্ধ্যায় ইন্ডিগোর বিমানে গুয়াহাটি যাওয়ার টিকিটের জন্য যাত্রীদের ৪,৭৬৮ টাকা এবং আকাশ এয়ারলাইন্সের বিমানে ৫,৫৫৯ টাকা ভাড়া দিতে হয়েছে। বিমানবন্দর ও বিমান সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, সড়ক ও রেল চলাচল স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আগরতলা-গুয়াহাটি রুটে বিমানের ভাড়া ক্রমাগত বাড়তে থাকবে।
কাছাড় জেলায় লোহার সেতু ভেঙে যাওয়ায় গত কয়েকদিন ধরে শুধুমাত্র হাল্কা যানবাহন বিকল্প রাস্তায় চলাচল করছে। এই পরিস্থিতিতে গুয়াহাটি ও আগরতলায় বহু মানুষ আটকে পড়েছেন। রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ায় বিমানের উপর যাত্রীদের চাপ বেড়ে যাওয়ায় এবং এই রুটে বিমানের সংখ্যা সীমিত থাকায় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন।
এ ছাড়া, গুয়াহাটি দিয়ে যাতায়াতে এই বেহাল পরিস্থিতির প্রভাব আগরতলা-কলকাতা রুটেও পড়ছে। যাত্রীদের অভিযোগ, পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বিমান সংস্থাগুলি ধীরে ধীরে এই রুটেও টিকিটের মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছে।
এই পরিস্থিতি যাত্রীদের জন্য অত্যন্ত কষ্টদায়ক হয়ে উঠেছে। সড়ক ও রেলপথের সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ না হলে এই সংকট আরও তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।