রাজপরিবার ও বিরোধীদের বঞ্চনার অভিযোগে উত্তপ্ত ত্রিপুরা বিধানসভা
নিউজ ডেস্ক || উদয়পুরের ঐতিহাসিক মাতা ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরের নবরূপে সজ্জিত উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাজপরিবারের সদস্যদের আমন্ত্রণ না জানানো নিয়ে ত্রিপুরা বিধানসভায় তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার বিধানসভায় শাসক জোটের শরিক তিপরা মথা এই ঘটনায় চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে মন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে রাজপরিবারের কোনও সদস্যকে আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিপরা মথার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কলই। তিনি বলেন, “এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে রাজপরিবারকে উপেক্ষা করা হল কেন?” এই প্রশ্নের জবাবে পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান, রাজ্য সরকার মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহার নির্দেশে প্রস্তুত অতিথি তালিকায় রাজপরিবারের সদস্যসহ তিনজন সংসদ সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছিল। তবে, দিল্লির সাউথ ব্লক থেকে প্রধানমন্ত্রীর দফতর একটি সংশোধিত তালিকা পাঠায়, যেখানে পূর্ব ত্রিপুরার সাংসদ কৃতি দেবী দেববর্মা এবং মন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মার নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল। মন্ত্রী আরও বলেন, “রাজপরিবারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। এখানে অবহেলার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।”
তিপরা মথার বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মা জানান, তিনি ২২ সেপ্টেম্বর সকালে রাজপরিবারের প্রদ্যোৎ কিশোর দেববর্মার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। প্রদ্যোৎ তখন রাজ্যের বাইরে ছিলেন এবং জানিয়েছেন যে তিনি বা রাজমাতা কেউই কোনও আমন্ত্রণপত্র পাননি। এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ স্পষ্ট করেন যে, রাজ্য সরকার এমবিবি বিমানবন্দর, পালাটানা এবং মন্দিরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনার জন্য বিশদ তালিকা প্রস্তুত করেছিল। তবে, প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র পূজা ও উদ্বোধনের জন্য এসেছিলেন, কোনও জনসভা বা ভাষণ ছিল না। ফলে সাউথ ব্লক তাদের প্রটোকল অনুযায়ী চূড়ান্ত তালিকা নির্ধারণ করে।
এদিকে, কংগ্রেস বিধায়ক বিরজিত সিনহা অভিযোগ তুলে বলেন, “বিরোধী বিধায়কদের কেন আমন্ত্রণ জানানো হয়নি? এই মন্দির কি শুধু শাসক দলের জন্য?” জবাবে মুখ্যমন্ত্রী ডঃ মানিক সাহা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী কেবল মন্দিরে পূজা দিতে এসেছিলেন। জনসভা থাকলে সকলকেই আমন্ত্রণ জানানো হতো।”
এই ঘটনা ত্রিপুরার রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। রাজপরিবারের প্রতি সম্মান ও রাজ্যের ঐতিহ্য রক্ষার প্রশ্নে তিপরা মথা ও বিরোধী দলগুলির অসন্তোষ ভবিষ্যতে আরও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।