নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরার জনজাতি সম্প্রদায়ের অধিকার ও উন্নয়নের প্রশ্নে ফের মুখ খুললেন তিপ্রা মথা দলের প্রতিষ্ঠাতা তথা এমডিসি প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মা। আজ সামাজিক মাধ্যমে এক স্পষ্ট বার্তায় তিনি নাগাল্যান্ডের নাগা সম্প্রদায়ের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, গত ২৫ বছর ধরে নাগারা একত্রিত হয়ে নিজেদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার লড়াই চালিয়ে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সুবিধা আদায় করছে। কিন্তু ত্রিপুরার জনজাতিরা এখনও বিভক্ত, একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যস্ত। এই পরিস্থিতিকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা যদি বিভেদ ভুলে একজোট হই, তবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আমাদের দাবি আরও শক্তিশালীভাবে তুলে ধরতে পারি। জনজাতি উন্নয়ন কোনও দলের এজেন্ডা নয়, এটি গোটা সম্প্রদায়ের প্রাপ্য।”
প্রদ্যোত আরও উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি তাদের সংকল্প পত্রে জনজাতি উন্নয়নের জন্য জমি হস্তান্তর বিল, সরাসরি অর্থ বরাদ্দ, সংবিধানের ১২৫তম সংশোধনী বাস্তবায়নসহ একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু আজও এগুলো কার্যকর হয়নি। ত্রিপাক্ষিক চুক্তির বাস্তবায়নেও অগ্রগতির অভাবে তিনি উষ্মা প্রকাশ করেন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রতিশ্রুতি রক্ষার আবেদন জানান।
তিনি জানান, এই বিষয়ে ত্রিপুরা বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য্যের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাঁর প্রস্তাব, সকল রাজনৈতিক দলের জনজাতি নেতাদের নিয়ে একটি যৌথ চিঠি কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হোক। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এটি কোনও দলের স্বার্থ নয়, জনজাতি জনগণের মৌলিক অধিকার ও উন্নয়নের প্রশ্ন। বিভেদ নয়, একতাই আমাদের হাতিয়ার।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তিপ্রা মথায় ভাঙ্গন ঠেকাতে এবং জনজাতি বঞ্চনার বিষয়টি তুলে ধরে প্রদ্যোত এখন দ্বিমুখী কৌশল নিয়েছেন। একদিকে তিনি শাসক জোটের শরিক বিজেপির উপর চাপ সৃষ্টি করছেন, অন্যদিকে দলের বিদ্রোহীদের দমাতে জনজাতি জনগণের কাছে ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন। তাঁর এই উদ্যোগ ত্রিপুরার জনজাতি রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে।
ত্রিপুরার জনজাতি সম্প্রদায়ের অধিকার ও উন্নয়নের লড়াইয়ে প্রদ্যোত দেববর্মার এই ঐক্যের আহ্বান নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলতে পারে। এখন দেখার বিষয়, এই উদ্যোগ কতটা সফল হয় এবং রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণে কী ধরনের পরিবর্তন আনে।