বিশ্রামগঞ্জে বিকশিত কৃষি সংকল্প অভিযান: কৃষকদের আয় বৃদ্ধিতে রাজ্য সরকারের প্রতিশ্রুতি
নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরার কৃষকদের আয় বৃদ্ধি ও খাদ্য স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। সিপাহীজলা জেলার বিশ্রামগঞ্জে আয়োজিত ‘বিকশিত কৃষি সংকল্প অভিযান’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী রতন লাল নাথ, জেলা সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, কৃষি দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, জেলাশাসক ড. সিদ্ধার্থ শিব জয়সওয়াল সহ অন্যান্য আধিকারিকগণ।
মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, “উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষকদের কল্যাণ ও আর্থিক স্বচ্ছলতা নিশ্চিত করতে রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশে কৃষকদের আয় বৃদ্ধির জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এআই এবং ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহার কৃষিক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।” তিনি জানান, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কৃষকদের গড় আয় ছিল ৬,৫৮০ টাকা, যা বর্তমানে বেড়ে ১৩,৫৯০ টাকায় পৌঁছেছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, সম্প্রতি দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ‘রাইজিং নর্থইস্ট ইনভেস্টরস সামিট’-এ ত্রিপুরায় ১৫,৬০০ কোটি টাকার বিনিয়োগের সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়েছে। এটি রাজ্যের কৃষি ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে। তিনি বলেন, “কৃষকরা আমাদের অন্নদাতা। তাদের উন্নত প্রযুক্তি ও সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে আমরা দেশ ও রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।”
রাজ্যে বর্তমানে ৪.৭২ লক্ষ কৃষক রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী কৃষি সম্মান নিধির আওতায় ১৯টি কিস্তিতে ৮৪৩ কোটি টাকার বেশি সরাসরি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনায় ১০.৬৩ কোটি টাকা এবং ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়ে ৪৪৬ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে। সয়েল হেল্থ কার্ড ২.০৬ লক্ষ কৃষকের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে এবং ৫৮টি ব্লকে কৃষক উৎপাদক সংগঠন (এফপিও) গঠন করা হয়েছে।
ডিজিটাল কৃষি মিশনের অধীনে এআই ভিত্তিক ক্রপ এডভাইজারি সিস্টেম চালু করা হয়েছে, যা কৃষকদের ফসল উৎপাদনে সহায়তা করছে। এছাড়া, ১৪৪টি বাজারের অবকাঠামো উন্নয়নে ৩০৩.৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, খরচ হ্রাস, ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতকরণ, বৈচিত্র্যকরণ এবং জৈব চাষে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ছয়টি কৌশল বাস্তবায়িত হচ্ছে।
এই অভিযান আগামী ১২ জুন পর্যন্ত চলবে, যা ত্রিপুরার কৃষি ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।