ত্রিপুরায় জলজীবন মিশনের অগ্রগতি: ৬.৪৬ লক্ষ পরিবারে পানীয়জলের সংযোগ, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরা রাজ্য সরকার জলজীবন মিশনের আওতায় রাজ্যের প্রতিটি পরিবারে নিরাপদ পানীয়জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে মিশন মুডে কাজ করে চলেছে। রাজ্য বিধানসভার অধিবেশনের প্রথম দিনে বিধায়ক রাম পদ জমাতিয়ার আনীত একটি প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা জানান, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত রাজ্যের ৬,৪৬,৭৫৮ পরিবারে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৫ আগস্ট ২০১৯-এ জলজীবন মিশন শুরু করেন, যার ফলে গোটা ভারতবর্ষে পানীয়জল সরবরাহে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। ত্রিপুরায় এই প্রকল্প ঘোষণার পর থেকে পানীয়জল ও স্বাস্থ্য বিধান দপ্তর পাহাড়ি ও সমতলের জনবসতি এলাকায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে নিয়মিত ও দীর্ঘমেয়াদী পানীয়জল সরবরাহের জন্য নিরলস কাজ করে চলেছে। রাজ্যের মোট ৭,৫০,৮৪৯ পরিবারের মধ্যে ৮৬.১৪% পরিবারে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে, যা পূর্বে ছিল মাত্র ৩%।
ডাঃ সাহা জানান, এডিসি এলাকার ৫৮৭টি গ্রাম এবং ৬০৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানীয়জল পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে ৪,২১৬টি গভীর নলকূপ, ১০,১৭৬টি স্বল্প ব্যাসের গভীর নলকূপ, ৪০টি ভূপৃষ্ঠস্থ জল পরিশোধনাগার, ১,৮৩১টি আয়রন রিমুভ্যাল প্ল্যান্ট এবং ৫৩১টি উদ্ভাবনী প্রকল্পের মাধ্যমে পানীয়জল সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে। পাহাড়ি এলাকায় ছড়া ও ঝর্ণার জলকে উদ্ভাবনী পদ্ধতিতে পানীয়জল হিসেবে ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, জলজীবন মিশন প্রকল্পের গুণমান পর্যবেক্ষণ ও সচেতনতার জন্য দপ্তর নিরলস কাজ করছে। জলজীবন মিশন ১.০ থেকে এখন ২.০-তে উন্নীত হয়েছে, যা কেন্দ্রীয় বাজেট ২০২৫-২৬-এ ঘোষিত হয়েছে। এছাড়াও, রাজ্যে সিএম হেল্পলাইন ১৯০৫ এবং আমার সরকার পোর্টালের মাধ্যমে জনগণের সমস্যা সমাধানে তৎপর রয়েছে সরকার। জলের গুণমান পরীক্ষার জন্য রাজ্যে ২১টি এনএবিএল-অনুমোদিত পরীক্ষাগার কাজ করছে।
বিধানসভায় বিধায়কদের আলোচনা ও পরামর্শকে গুরুত্ব দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দেন, সরকার ও দপ্তর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। তিনি বলেন, “পৃথিবীর চার ভাগের তিন ভাগ স্থল, বাকি এক ভাগ জল। তাই জলের অভাব মেটাতে আমরা কাজ করে চলেছি।”
জলজীবন মিশনের এই অগ্রগতি ত্রিপুরার প্রতিটি ঘরে নিরাপদ পানীয়জল পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।