আগরতলা || জল জীবন মিশনে রাজ্যে ১ হাজার ১৯৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও এডিসি ভিলেজ কমিটি এলাকায় এখন পর্যন্ত ৬ লক্ষ ৪১ হাজার ৫২১টি পরিবারে পাইপলাইনের মাধ্যমে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ১ হাজার ১৯৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও এডিসি ভিলেজ কমিটি এলাকায় বসবাস করেন ৭ লক্ষ ৫০ হাজার ৮৪৭টি পরিবার অর্থাৎ ৮৫.৪৪ শতাংশ পরিবারে ইতিমধ্যেই পাইপলাইনের মাধ্যমে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। আজ বিধানসভায় বিধায়ক বিশ্বজিৎ কলই আনীত একটি দৃষ্টি আকর্ষণী নোটিশের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা জানান।
মুখ্যমন্ত্রী সভায় জানান, ২০১৯ সালের ১৫ আগস্ট কেন্দ্রীয় সরকার জল জীবন মিশন প্রকল্প ঘোষণা করার পর থেকেই রাজ্যের পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তর প্রতিটি গ্রামীণ পরিবারে পাইপলাইনের মাধ্যমে নিয়মিত এবং দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে পানীয়জল সরবরাহ করার লক্ষ্যে মিশন মোডে কাজ করছে। রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় বিভিন্ন উৎসের মাধ্যমে পানীয়জল সরবরাহ করা হচ্ছে যেমন গভীর নলকূপ, স্বল্প ব্যাসের অগভীর নলকূপ, জল পরিশোধনাগার, উদ্ভাবনীমূলক প্রকল্প ইত্যাদি। কিছু পাহাড়ি এলাকা ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে ঘরবাড়ি রয়েছে। তেমনি জল বহনকারী স্তরের অপ্রতুলতার জন্য পানীয়জলের স্থায়ী উৎস যেমন গভীর নলকূপ, স্বল্প ব্যাসের অগভীর নলকূপ ইত্যাদি খনন করা সম্ভব হচ্ছে না। ঐসব এলাকার ছড়া, নালা, জলাধার এবং ঝর্ণার জলকে কেন্দ্র করে উদ্ভাবনীমূলক (ইনোভেটিভ) প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে এবং আরও প্রকল্প তৈরির কাজ চলছে। পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তর জল জীবন মিশন প্রকল্পের অধীনে এবছর ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মিশন মোডে কাজ করছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, যে সকল উৎসের পানীয়জলে দ্রবীভূত আয়রনের গ্রহণযোগ্য মাত্রা প্রতি লিটারে এক মিলিগ্রামের বেশি সেখানে লৌহ দূরীকরণ প্রকল্প স্থাপন করে পানীয়জল সরবরাহ করছে এবং আরও লৌহ দূরীকরণ প্রকল্প স্থাপনের কাজ চলছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের মাধ্যমে পানীয়জল সরবরাহ করা হচ্ছে। যেসকল প্রত্যন্ত অঞ্চলে পানীয়জলের উৎস স্থাপন করা এখনও সম্ভব হয়নি সেসব অঞ্চলে প্রয়োজনীতার নিরিখে ট্যাঙ্কারের মাধ্যমে পানীয়জল সরবরাহ করা হচ্ছে। তাছাড়া ঐসকল এলাকায় স্থানীয় উৎস যেমন মেশিনারি ওয়েল, মার্ক-টু, রিং ওয়েল ইত্যাদি থেকেও এলাকাবাসী জল সংগ্রহ করছেন। পানীয়জল ও স্বাস্থ্যবিধান দপ্তর থেকে জনস্বার্থে ঐসকল স্থানীয় উৎসগুলিকে জীবাণু মুক্ত করার কাজও চলছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে টি.টি.এ.এ.ডি.সি ভিলেজ কাউন্সিল এলাকায় ১ হাজার ১৫১টি গভীর নলকূপ, ৫ হাজার ১১০টি স্বল্প ব্যাসের অগভীর নলকূপ, ২৩টি জল পরিশোধনাগার এবং ১৭৪টি ইনোভেটিভ প্রকল্পের মাধ্যমে ৩ লক্ষ ২৭ হাজার ১৯৮-৯টি পরিবারের মধ্যে ২ লক্ষ ৬৭হাজার ৬০৫টি পরিবারে পানীয়জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। যা শতকরা হিসেবে ৮১৭৮ শতাংশ। এ.ডি.সি. এলাকার বিভিন্ন পাড়ায় জলের উৎস স্থাপনের কাজ চলছে। এরমধ্যে অনেক কাজ শেষের পথে এবং চালু হওয়ার অপেক্ষায় আছে। এবছর সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে প্রতিটি এডি.সি ভিলেজে পানীয়জলের ব্যবস্থা করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।