নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ড.) মানিক সাহা হাপানিয়ার ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজের বিবেকানন্দ অডিটোরিয়ামে দুদিনব্যাপী গাছপালন ও রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এই উপলক্ষে তিনি রাজ্যের স্বাস্থ্য অবকাঠামো উন্নয়ন, রক্তদানের গুরুত্ব এবং পরিবেশ সংরক্ষণের উপর জোর দিয়ে বক্তৃতা দেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২০১৮ সাল থেকে রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য অবকাঠামো উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, এবং রাজ্যে জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় ডাক্তাররা দক্ষতা অর্জন করেছেন। তিনি বলেন, “ত্রিপুরাকে একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা চলছে। এজিএমসি এবং জিবিপি হাসপাতালে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটা কর্পোরেট-শৈলীর সুপার-স্পেশালিটি ব্লক নির্মিত হয়েছে। এছাড়া, আইএলএস হাসপাতালের পাশে একটি পূর্ণাঙ্গ চক্ষু হাসপাতাল স্থাপনের আলোচনা চলছে।”
রক্তদান প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রক্তের কোনো ধর্ম নেই, এটি মানবতাকে শক্তিশালী করে।” তিনি জানান, একজন পুরুষ বছরে চারবার এবং একজন মহিলা তিনবার রক্তদান করতে পারেন, যা শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। রাজ্যে বর্তমানে ১৪টি রক্তভাণ্ডার রয়েছে। তিনি মাদকাসক্তি, এইচআইভি এবং এইডসের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনের আহ্বান জানান।গাছপালনের গুরুত্ব তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রকৃতি আমাদের বেঁচে থাকার উপকরণ সরবরাহ করে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘এক পেড় মায়ের নামে’ কর্মসূচি গাছের গুরুত্ব তুলে ধরেছে।” তিনি বিবেকানন্দ অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গণে একটি চারা রোপণ করেন এবং রক্তদান ক্যাম্প পরিদর্শন করে দাতাদের উৎসাহিত করেন।
এই কর্মসূচি ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ, রোটারি ক্লাব এবং ত্রিপুরা মেডিকেল অ্যান্ড নার্সিং কলেজের কর্মচারী সমিতি যৌথভাবে আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে রোটারি ক্লাবের “দৃষ্টিপথ” কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়, যার মাধ্যমে হিপ ও হাঁটু প্রতিস্থাপন রোগীদের সহায়ক সরঞ্জাম এবং ১৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের বিনামূল্যে চশমা প্রদান করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী দুজন সুবিধাভোগীকে প্রতীকীভাবে এই সরঞ্জাম ও চশমা বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তার মধ্যে ছিলেন ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজ সোসাইটির চেয়ারম্যান প্রমথেশ রায়, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্বপন সাহা, প্রিন্সিপাল প্রফেসর (ড.) অরিন্দম দত্ত, রোটারি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ড. দামোদর চট্টোপাধ্যায় এবং বিআরএএম টিচিং কলেজের মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট ড. জয়ন্ত কুমার পোদ্দার।
এই উদ্যোগ ত্রিপুরার স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষার প্রতি রাজ্য সরকারের প্রতিশ্রুতি এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।