নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরায় কৃষকদের কল্যাণে রাজ্য সরকারের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। পিএম কিষাণ সম্মাননিধি প্রকল্পের ২০তম কিস্তি প্রদান উপলক্ষ্যে আগরতলার অরুন্ধতিনগরে স্টেট এগ্রিকালচার রিসার্চ স্টেশনে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা জানান, ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে রাজ্যের কৃষকদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ২ লক্ষ ২৫ হাজার ৩৩৫ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে। এজন্য কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৪৪৬ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণের জন্য ২০৪ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য রাজ্যের ১৪৪টি বাজারে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলছে, যার জন্য ৩০০ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে। তিনি আরও বলেন, পিএম কিষাণ সম্মাননিধি প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের ২ লক্ষ ৮৫ হাজার কৃষকের অ্যাকাউন্টে ৪৫ কোটি ৪৩ লক্ষ টাকা জমা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বনাধিকার আইনে পাট্টাপ্রাপ্ত ৭৭ হাজার ১৪৩ জন কৃষকও এই সুবিধা পেয়েছেন।
এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর প্রদেশের বারাণসীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান থেকে দেশের ৯ কোটি ৭০ লক্ষ কৃষকের অ্যাকাউন্টে ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ২০তম কিস্তি প্রদান করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প সফলভাবে রূপায়ণ করা হচ্ছে। ত্রিপুরায় ফসল বীমা যোজনায় ১০ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকা এবং কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ২ হাজার ২৭২ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ২ লক্ষ ৬ হাজার ৭৪২ জন কৃষককে সয়েল হেলথ কার্ড প্রদান করা হয়েছে।
জৈব চাষের প্রসারে রাজ্য সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। ২০ হাজার ১৬১ হেক্টর জমি জৈব চাষের আওতায় আনা হয়েছে। কৃষি সেক্টরের সংখ্যা ৪৪ থেকে বাড়িয়ে ১৩০-এ উন্নীত করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ক্রপ ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পে কৃষকদের বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার কৃষকদের পাশে রয়েছে, আর কৃষকরাও সরকারের পাশে রয়েছেন।”
মুখ্যমন্ত্রী কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানীয়জল, আইন-শৃঙ্খলা সহ সব ক্ষেত্রে রাজ্যের অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে বলেন, “এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা এবং এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত গড়ার কাজে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।” অনুষ্ঠানে তিনি ৭ জন কৃষকের হাতে সয়েল হেলথ কার্ড তুলে দেন এবং কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের স্টল পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ, পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিৎ শীল, কৃষি দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, অধিকর্তা ফণীভূষণ জমাতিয়া, উদ্যান দপ্তরের অধিকর্তা দীপক কুমার দাস সহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।