নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরায় বিজেপি সরকারের শাসনকালে দুর্নীতি ও লুটের রাজত্ব চলছে বলে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার ও সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী। আজ ওরিয়েন্ট চৌমুহনীতে বিদ্যুৎ, সিএনজি, পিএনজি, পানীয় জল ও গোমতী দুধের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আয়োজিত গণঅবস্থান ও জনসভায় তারা এই অভিযোগ তুলেছেন। এই কর্মসূচিতে প্রাক্তন মন্ত্রী মানিক দে-সহ বামফ্রন্টের অন্যান্য নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
জনসভায় জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, “আরএসএস পরিচালিত বিজেপি সরকার ত্রিপুরাবাসীকে বিভ্রান্ত করছে। ২০১৮ ও ২০২৩ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালনে তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। মানুষ ভেবেছিল, বিজেপির ইস্তেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ হবে, কিন্তু তারা শুধু ষড়যন্ত্র করেছে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিজেপি সরকার রাজ্যবাসীর উপর একের পর এক ট্যাক্সের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। বিদ্যুৎ মাশুল ও পানীয় জলের কর বৃদ্ধির পাশাপাশি স্মার্ট মিটার বাধ্যতামূলক করায় জনগণ প্রতিদিন বিক্ষোভে সামিল হচ্ছেন। তিনি বলেন, “বামফ্রন্ট সরকার যখন রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা করেছিল, তখন মানুষের বাকস্বাধীনতা ছিল। কিন্তু বিজেপি ক্ষমতায় এসে তা কেড়ে নিয়েছে।”
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, “বিজেপি সরকার ২০১৮ ও ২০২৩ সালে ১০টি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু কোথাও ট্যাক্স বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেনি। বর্তমানে ত্রিপুরায় যেভাবে ট্যাক্স বাড়ানো হচ্ছে, তা অগ্রহণযোগ্য।” তিনি কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “কেন্দ্র সরকার বিভিন্ন রাজ্যের সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ। ত্রিপুরায় নির্বাচনের সময় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু তা ছিল মানুষকে বিভ্রান্ত করার কৌশল।”
মানিক সরকার আরও অভিযোগ করেন, “রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দফতরে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্নীতির সমার্থক শব্দই এখন বিজেপি সরকার। ত্রিপুরায় লুটের রাজত্ব চলছে, আর তাতে যুক্ত হয়েছে তিপরা মথা। ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টকে আটকাতে তিপরা মথা বিজেপিকে সমর্থন দিয়েছিল। ফলে এডিসি এলাকায়ও লুটের রাজত্ব কায়েম হয়েছে।” তিনি উল্লেখ করেন, এডিসি এলাকায় সরকারি কর্মচারীরা সময়মতো বেতন পাচ্ছেন না, স্কুল-কলেজে শিক্ষক স্বল্পতা চলছে, এবং জনগণ নানা সমস্যায় জর্জরিত।
গণঅবস্থানে উপস্থিত জনতা বিদ্যুৎ, সিএনজি, পিএনজি, পানীয় জল ও গোমতী দুধের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবি জানান। তারা স্মার্ট মিটার বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্তেরও তীব্র বিরোধিতা করেন। বক্তারা সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের কষ্ট উপেক্ষা করার অভিযোগ তুলে বলেন, এই সমস্যাগুলো সমাধান না হলে আন্দোলন আরও জোরদার হবে।


