নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ড.) মানিক সাহা জানিয়েছেন, জনসচেতনতা ও সতর্কতার মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা ও মৃত্যু এড়ানো সম্ভব। আগরতলার স্বামী বিবেকানন্দ ময়দানে পরিবহন দফতর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এই অনুষ্ঠানে সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির উদ্বোধন, ১৬টি বেসিক লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স বিতরণ এবং যাত্রী নিরাপত্তার জন্য যানবাহনের অবস্থান ট্র্যাকিং ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা চালু করা হয়।
রাজ্য পুলিশ (ট্রাফিক) ও ফায়ার অ্যান্ড ইমার্জেন্সি সার্ভিস বিভাগকে ‘স্পেশাল অ্যাসিস্ট্যান্স টু স্টেটস ফর ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট স্কিম’-এর আওতায় ১৬টি অ্যাম্বুলেন্স প্রদান করা হয়, যার মোট মূল্য ৩.৮৪ কোটি টাকা। এছাড়া, যাত্রী নিরাপত্তার জন্য যানবাহনে ট্র্যাকিং ডিভাইস সংযোজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, জ “জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য। এই অ্যাম্বুলেন্স ও ট্র্যাকিং ব্যবস্থা সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচিকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করবে।”
তিনি আরও বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা শুধু ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, এটি জাতীয় ক্ষতি, কারণ এতে মানব সম্পদের হ্রাস ঘটে এবং পরিবারগুলো বিপর্যস্ত হয়। সড়ক নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে তিনি ‘রাহ-বীর প্রকল্প’ (গুড সামারিটান প্রকল্প), যেখানে দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের সাহায্যকারীদের ২৫,০০০ টাকা পুরস্কার ও সার্টিফিকেট দেওয়া হয়, হিট অ্যান্ড রান স্কিম এবং যানবাহন স্ক্র্যাপিং নীতির কথা তুলে ধরেন।
মুখ্যমন্ত্রী সড়ক নিরাপত্তার জন্য শিক্ষার পাশাপাশি সচেতনতার গুরুত্বের উপর জোর দেন। তিনি অতিরিক্ত গতি, ভুল ড্রাইভিং, মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো, হেলমেট না পরা এবং অমনোযোগী ড্রাইভিংকে দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেন। তিনি ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলা, সতর্কতা বজায় রাখা এবং ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের সজাগ থাকার আহ্বান জানান। তিনি জানান, রাজ্যে সড়ক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফলাফল দেখা যাচ্ছে এবং গত বছরের তুলনায় দুর্ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান, পরিবহন দফতর ও ট্রাফিক পুলিশ সারা বছর ধরে সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। তিনি জনসচেতনতার গুরুত্ব তুলে ধরে ইন্টারসেপ্টর যানবাহন প্রদান, গুড সামারিটান পুরস্কার এবং যানবাহনে ভিএলটি ডিভাইস সংযোজনের মতো উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন। তিনি দুর্ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের সাহায্য করাকে সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পরিবহন সচিব ইউ.কে. চাকমা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাজ্য পুলিশের মহাপরিচালক অনুরাগ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পরিবহন দফতরের অতিরিক্ত সচিব সুব্রত চৌধুরী। আগরতলা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের মেয়র দীপক মজুমদারও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।