নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরার রেল ইতিহাসে এক নতুন মাইলফলক স্থাপিত হলো। চূড়াইবাড়ি থেকে সাব্রুম পর্যন্ত ২৭১ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রডগেজ রেলপথের বিদ্যুতায়নের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। মঙ্গলবার আগরতলা রেলস্টেশন কমপ্লেক্সে ১৩২ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন এবং ফিডার বে-এর উদ্বোধনকালে এই ঘোষণা করেন রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ। এই অর্জন ত্রিপুরার রেল যোগাযোগে এক বিপ্লবী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
মন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন, ১৯৬৪ সালে ধর্মনগরে প্রথম ট্রেন পৌঁছায়। এরপর ২০০৮ সালে আগরতলা এবং ২০১৯ সালে সীমান্ত শহর সাব্রুম রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে গত সাত বছরে রেল খাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। মিটার গেজ থেকে ব্রডগেজে রূপান্তর, ২০২৩ সালে আগরতলা-আখাউড়া আন্তর্জাতিক রেল সংযোগের সম্পূর্ণতা এবং এখন ২৭১ কিলোমিটার রেলপথের বিদ্যুতায়ন এই উন্নয়নের প্রমাণ।
‘অমৃত ভারত প্রকল্প’-এর অধীনে আগরতলা, উদয়পুর, কুমারঘাট এবং ধর্মনগর রেলস্টেশনের উন্নয়ন কাজও দ্রুত এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে ত্রিপুরা থেকে আগরতলা-শিলচর, ত্রিপুরাসুন্দরী, রাজধানী, জানশতাব্দী, গরিব রথ, আগরতলা-গুয়াহাটি এবং মুম্বই স্পেশাল সহ ১৯টি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন চলাচল করছে। এছাড়া চারটি ডেমু ট্রেন প্রতিদিন প্রায় ১২,০০০ যাত্রী বহন করছে।
বিদ্যুতায়নের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে মন্ত্রী বলেন, কয়লা ও ডিজেল ইঞ্জিনের পরিবেশগত ক্ষতির কারণে বিদ্যুৎচালিত ট্রেনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। দেশের মোট ৬৯,৫০০ কিলোমিটার ব্রডগেজ লাইনের মধ্যে ৬৮,৬০০ কিলোমিটার (৯৮.৮০%) ইতিমধ্যে বিদ্যুতায়িত হয়েছে। ত্রিপুরার ২৭১ কিলোমিটার রেললাইন এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে। তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকার ও উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে (এনএফআর) প্রস্তুত থাকলে এখনই বিদ্যুৎচালিত ট্রেন পরিষেবা শুরু করা সম্ভব।পাশাপাশি, বিদ্যুৎ ছাড়া উন্নয়ন অসম্ভব বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, রাজ্যে সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং ৪৫টি স্থানে চার্জিং স্টেশন নির্মাণের কাজ চলছে।
এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে বিধায়ক তথা মুখ্য সচেতক কল্যাণী রায়, বিধায়ক মীনা রানি সরকার, বিধায়ক অভিষেক দেবরায় এবং এনএফআর-এর ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।