নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা আজ রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর আয়োজিত এক রাজ্যভিত্তিক সম্মাননা সমারোহের উদ্বোধন করেন। এই অনুষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় শতভাগ সাফল্য অর্জনকারী ৩১৬টি সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং বিদ্যাজ্যোতি স্কুলকে সম্মানিত করা হয়। এর মধ্যে ৫০টি বিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের হাতে মুখ্যমন্ত্রী স্মারক ও অভিজ্ঞানপত্র তুলে দেন।
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে শিক্ষার সার্বিক গুরুত্বের উপর জোর দিয়ে বলেন, “শিক্ষা শুধু পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি সমাজ ও দেশের কল্যাণে অবদান রাখে।” তিনি শিক্ষকদের “প্রকৃত মানুষ গড়ার কারিগর” হিসেবে উল্লেখ করে তাঁদের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং শিক্ষার্থীদের ত্রুটি সমাধানে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, একটি বিদ্যালয়ের সাফল্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং শিক্ষা পরিবেশের সমন্বয়ের উপর নির্ভরশীল।
মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারের শিক্ষা ক্ষেত্রে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে টি-স্কোয়ার শিক্ষা পদ্ধতি, বছর বাঁচাও পরীক্ষা, রেমিডিয়াল ক্লাস, সুপার-৩০ প্রকল্প, মুখ্যমন্ত্রী মেধা পুরস্কার, নবম শ্রেণির ছাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে বাইসাইকেল বিতরণ, প্রি-প্রাইমারি ক্লাস, মিশন মুকুল, পি.এম. শ্রী প্রকল্প, এবং মুখ্যমন্ত্রী কন্যা আত্মনির্ভর যোজনার আওতায় ১৪০ জন মেধাবী ছাত্রীকে বিনামূল্যে স্কুটি প্রদান। এছাড়া, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৩৭৮টি বিদ্যালয়ের জন্য টিচিং লার্নিং মেটেরিয়ালস ক্রয় এবং সি.এম.-সাথ অ্যাওয়ার্ড ও লক্ষ্য প্রকল্পের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
শিক্ষা পরিকাঠামোর উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২০২৪-২৫ সালে ১৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৪টি নতুন বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ এবং ৮০.৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৪৬টি বিদ্যালয়ের সংস্কার সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ২৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩০টি নতুন ভবন এবং ১৫১.২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ১২৩টি বিদ্যালয়ের সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে।
ত্রিপুরাকে ভারতের তৃতীয় পূর্ণ সাক্ষর রাজ্য হিসেবে ঘোষণার কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী গর্ব প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তরের সাফল্য সম্বলিত একটি পুস্তিকার আবরণ উন্মোচন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা এন. সি. শর্মা, বিশেষ সচিব রাভাল হেমেন্দ্র কুমার এবং এস.সি.ই.আর.টি., ত্রিপুরার অধিকর্তা লালনুন্নেমি ডারলং।
এই সম্মাননা সমারোহ ত্রিপুরার শিক্ষা ক্ষেত্রে একটি নতুন মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, যা রাজ্যের শিক্ষার গুণগত মান ও প্রতিভা বিকাশের প্রতিশ্রুতিকে আরও দৃঢ় করেছে।