আগরতলা || রাজ্যকে দুধ, মাংস ও ডিম উৎপাদনে স্বয়ম্ভর করার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণ করা হচ্ছে।রাজ্যের সব জেলাতেই ডেয়ারি স্থাপনের জন্য ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। পাচারকালীন সময়ে উদ্ধারকৃত গবাদি পশু সুরক্ষিত স্থানে রাখার জন্য রাজ্যের ৮টি জেলাতে ৮টি গোশালা স্থাপন করা হবে। প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী সুধাংশু দাস আজ প্রজ্ঞাভবনের ১নং হলে প্রাণী কল্যাণ বিধি, আইন ও নিয়মাবলী নিয়ে আয়োজিত রাজ্যভিত্তিক একদিনের আলোচনাচক্র ও সচেতনতা অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন। ত্রিপুরা ভেটেরিনারি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন এই আলোচনাচক্রের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে করোনাকালীন সময়ে প্রাণী কল্যাণে অসাধারণ কাজ করার জন্য গোমতী অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার সোসাইটিকে ও দপ্তরের কৈলাসহরের সহ অধিকর্তা তপন রায়কে পুরস্কৃত করা হয়। তপন রায়ের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন রাহুল ধর পুরকায়স্থ। এছাড়া গতবছরের বন্যার সময় প্রাণী কল্যাণে অভূতপূর্ব কাজ করার জন্য দক্ষিণ জেলার উপ অধিকর্তা ডা. সুবীর দাস ও তার সহকর্মীদের, গোমতী জেলার উপ অধিকর্তা ডা. বিল্ল দেববর্মী ও তার সহকর্মীদের ও সিপাহীজলা জেলার উপ অধিকর্তা ডা. অমল মজুমদার ও তার সহকর্মীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। প্রাণীসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী সহ অতিথিগণ তাদের হাতে শংসাপত্র ও স্মারক উপহার তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী সুধাংশু দাস বলেন, প্রাণীদের রক্ষা ও তাদের প্রতি সংবেদনশীলতার জন্য আমাদের আরও আন্তরিক হওয়া দরকার। তিনি বলেন, দপ্তর থেকে সারা বছর গবাদি পশুকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। প্রাণীসম্পদ বিকাশ মন্ত্রী বলেন, প্রাণীদের প্রতি অন্যায়, নিষ্ঠুরতা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য ভারত সরকার ১৯৬৪ সালে অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার বোর্ড গঠন করে। প্রতিটি রাজ্যে এই বোর্ড রয়েছে। আমাদের রাজ্যে এই সংস্থা যথাযথভাবে কাজ করছে। বিশেষ অতিথির ভাষণে আগরতলা পুর নিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার দপ্তরের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় প্রাণীদের রক্ষা করতে হবে।
তিনি বলেন, প্রাণীদের কল্যাণে আইন করে সবকিছু করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রাণীদের প্রতি চাই ভালবাসা, যত্ন ও সংবেদনশীলতা। প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের সচিব দীপা ডি নায়ার প্রাণীদের সুরক্ষার বিষয়ে আইনি বিষয়গুলি বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং প্রাণী সুরক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধিকর্তা ডা. এন কে চাকমা। উপস্থিত ছিলেন গোমতী জিলা পরিষদের সহকারি সভাধিপতি সুজন সেন, ত্রিপুরা ভেটেরিনারি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা প্রিয়ব্রত নাথ, সাধারণ সম্পাদক ডা. সুজিত সাহা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের উন্নয়নমূলক কাজের ভিডিও শো প্রদর্শন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর টেকনিক্যাল সেশনে প্রাণী কল্যাণের আইন নিয়ে আলোচনা করেন পশ্চিমবঙ্গ ভেটেরিনারি এন্ড অ্যানিমেল হাজবেন্ডারি এক্সটেনশন এডুকেশন দপ্তরের অধ্যাপক ডা. অরুণাশীষ গোস্বামী, পশ্চিম জেলার জেলা বন আধিকারিক জয়াকৃষ্ণণ ভি কে এবং প্রাণীসম্পদ বিকাশ দপ্তরের আধিকারিক (লিগ্যাল) ডা. বিশ্বজিৎ দাস।