অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানোর দাবিতে জোরালো আন্দোলন
নিউজ ডেস্ক || সোমবার ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা ‘বাংলাদেশী গো ব্যাক’ শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানোর দাবিতে এক অরাজনৈতিক মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এই কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন তিপ্রা মথার বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মা। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এই আন্দোলন আরও তীব্র আকার ধারণ করবে।
মিছিলটি শহরের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে রবীন্দ্রশতবার্ষিকী ভবন প্রাঙ্গণে এসে একটি সমাবেশে মিলিত হয়। এই কর্মসূচিতে জাতীয় পতাকা হাতে বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন, যা ছিল লক্ষণীয়। সমাবেশে বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মা কেন্দ্রীয় গৃহ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মেনে অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিকদের চিহ্নিত করে তাদের দ্রুত ফেরত পাঠানোর দাবি জানান। তিনি বলেন, “এটি একটি জাতীয় ইস্যু। জাতি প্রথম, দল পরে। বাঙালি, হিন্দু, মুসলিম, জনজাতি—সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অধিকার রক্ষায় এই লড়াইয়ে এগিয়ে আসতে হবে।”
বিধায়ক দেববর্মা আরও উল্লেখ করেন, অবৈধ অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে এটি প্রথম আন্দোলন নয়। ১৯৭১ সালের ২৯ নভেম্বর কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে প্রথম নির্দেশিকা জারি করেছিল। পরবর্তী সময়ে একাধিকবার এই নির্দেশিকা পুনর্ব্যক্ত করা হলেও ত্রিপুরায় তা কার্যকর হয়নি। সম্প্রতি ১৯ মে ২০২৫-এ কেন্দ্রীয় সরকার পুনরায় অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত ও ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। তিনি জানান, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, দিল্লি, হরিয়ানা, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যগুলো এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করলেও ত্রিপুরায় এখনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
তিনি সুইজারল্যান্ডের জাতিসংঘে ১৯৯৭ সালে ত্রিপুরার প্রতিনিধি হিসেবে এই বিষয়টি উত্থাপনের কথা স্মরণ করে বলেন, তখন থেকেই তিনি এই লড়াইয়ে সোচ্চার। তিনি সতর্ক করে বলেন, “অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা রাজ্যের জনগণের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে এবং দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। সরকার যদি এখনই ব্যবস্থা না নেয়, তবে এই আন্দোলন আরও জোরদার হবে।”
এই সমাবেশে উপস্থিত জনতা অবৈধ অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের প্রতি কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানান। ত্রিপুরার এই আন্দোলন এখন জাতীয় মঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।