নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরার বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী দিল্লি পুলিশের সাম্প্রতিক এক বিজ্ঞপ্তির তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন, যেখানে বাংলা ভাষাকে অবমাননা করে কিছু ব্যক্তিকে শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার কারণে ‘বাংলাদেশি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ঘটনা দেশব্যাপী তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। চৌধুরী অভিযোগ করেছেন যে, বিজেপি এবং আরএসএসের ‘হিন্দু-হিন্দি-হিন্দুস্থান’ নীতির মাধ্যমে দেশকে বিভাজনের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, যেখানে হিন্দি ছাড়া অন্য ভারতীয় ভাষাগুলির কোনও মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে না।
চৌধুরী বলেন, “বাংলা ভাষা ভারতের সংবিধানের অষ্টম তফশিলে তালিকাভুক্ত ২২টি ভাষার মধ্যে একটি। এই ভাষায় আমাদের জাতীয় সঙ্গীত লেখা হয়েছে। দিল্লি পুলিশের এই ধরনের আচরণ সম্পূর্ণ নিন্দনীয়।” তিনি আরও জানান, বিজেপি শাসিত কিছু রাজ্যে বাংলা ভাষাকে অপমান করা হচ্ছে এবং বাংলা ভাষীদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করে বিদ্বেষমূলক আচরণ করা হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষও দীর্ঘদিন ধরে একই ধরনের অবমাননার শিকার হচ্ছেন, তাদের চীন বা নেপালের বাসিন্দা বলে অপমান করা হচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করেন, “আরএসএস এবং বিজেপি হিন্দি ভাষাকে প্রাধান্য দিয়ে দেশে শাসন কায়েম করতে চায়। হিন্দি ছাড়া অন্য কোনও ভাষার নাগরিককে তারা ভারতীয় নাগরিক হিসেবে গণ্য করতে প্রস্তুত নয়।” তিনি এই ঘটনাকে ‘হিন্দু-হিন্দি-হিন্দুস্থান’ নীতির একটি অংশ হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, এটি দেশের ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের উপর আঘাত।
জিতেন্দ্র চৌধুরী দিল্লি পুলিশের এই অবমাননাকর আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এই ধরনের বিভাজনমূলক রাজনীতি দেশের ঐক্য ও সংহতির জন্য হুমকিস্বরূপ। বাংলা ভাষা এবং এর মর্যাদা রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করতে হবে।”
এই ঘটনা দেশজুড়ে বাংলা ভাষী সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে, এবং বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপের দাবি উঠেছে।