নিউজ ডেস্ক || সংবিধান স্বীকৃত ধ্রুপদী ভাষা বাংলাকে অপমান এবং বাঙালিদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার দাবিতে আজ আগরতলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও জনসভার আয়োজন করেছে ‘আমরা বাঙালি’ সংগঠন। এই কর্মসূচির মাধ্যমে বাঙালিদের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতন এবং তাদের ‘অনুপ্রবেশকারী’, ‘বাংলাদেশী’ বা ‘রোহিঙ্গা’ বলে অপবাদ দেওয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।
‘আমরা বাঙালি’র রাজ্য সচিব গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল জনসভায় বলেন, “ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতের স্বাধীনতার সংগ্রামে বাংলা থেকেই প্রথম বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল। কিন্তু ইংরেজরা বাঙালির ঐক্য ভাঙতে বঙ্গভঙ্গের পরিকল্পনা করেছিল। যদিও বাঙালির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মুখে তা বাতিল হয়, তবু বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলকে বিহার ও উড়িষ্যার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অগ্রসর হলেও, কংগ্রেস, মুসলিম লীগ, কমিউনিস্ট, আরএসএস ও হিন্দু মহাসভার মতো দলগুলির সহযোগিতার অভাবে অখণ্ড ভারতের স্বপ্ন পূরণ হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “নেতাজি হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান সকলকে একত্রিত করে ভারতের স্বাধীনতার জন্য লড়েছিলেন। কিন্তু ক্ষমতালোভী রাজনৈতিক দলগুলি ধর্মের নামে বাঙালি জাতিকে বিভক্ত করেছে। দেশভাগের পর থেকে ত্রিপুরায় বাঙালিরা বারবার আক্রান্ত হয়েছে। বাম আমলে হাজার হাজার বাঙালি খুন হয়েছে, এবং লাল, সাদা, গেরুয়া সব শাসক দলই বাঙালিদের উপর অত্যাচারে নীরব থেকেছে।”
গৌরাঙ্গ রুদ্র পাল অভিযোগ করেন, “যারা বাঙালিদের খুন, ধর্ষণ ও উচ্ছেদ করছে, তাদের রাজনৈতিক দলগুলি ভোটের স্বার্থে চাকরি, পদ ও কোটি কোটি টাকা দিয়ে পৃষ্ঠপোষকতা করছে। এর ফলে ‘গো ব্যাক বাংলাদেশী’ স্লোগান দিয়ে বাঙালিদের উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র চলছে। স্বাধীনতার পর থেকে এই অবিচার অব্যাহত রয়েছে। এমনকি আজও বাঙালিদের নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হচ্ছে।”
‘আমরা বাঙালি’র নেতৃবৃন্দ জানান, এই বিক্ষোভের মাধ্যমে তারা বাংলা ভাষা ও বাঙালির সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরছেন। তারা সকল রাজনৈতিক দলের নীরবতার সমালোচনা করে বাঙালি জাতির প্রতি ন্যায়বিচারের আহ্বান জানিয়েছেন।


