“১৯৭১–এর যুদ্ধ থেকে অপারেশন সিন্ধু: বিএসএফ–এর অমর গাথা“
নিউজ ডেস্ক || কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সহযোগিতা মন্ত্রী অমিত শাহ আজ নয়াদিল্লিতে বিএসএফ-এর অলঙ্করণ অনুষ্ঠান ও রুস্তমজি স্মারক বক্তৃতায় বলেন, “১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বিএসএফ-এর সাহসিকতা ও অবদান ভারত কোনও দিন ভুলবে না এবং বাংলাদেশকেও তা ভুলে যাওয়া উচিত নয়।” তিনি পহেলগামে জঙ্গি হামলার পর অপারেশন সিন্ধুর প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, এই অভিযানে ভারতের দৃঢ়তা ও সামরিক ক্ষমতার প্রমাণ মিলেছে, যেখানে পাকিস্তানের সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষকতার আসল চেহারা বিশ্বের সামনে উন্মোচিত হয়েছে।
অমিত শাহ জানান, ১৯৬৫ সালে সীমিত সম্পদ নিয়ে যাত্রা শুরু করা বিএসএফ আজ বিশ্বের বৃহত্তম ও সম্মানিত সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। কঠিন প্রাকৃতিক পরিবেশে—তীব্র গরম, হাড় কাঁপানো ঠান্ডা, দুর্গম পাহাড় কিংবা গভীর জঙ্গলে—বিএসএফ জওয়ানদের আত্মত্যাগ ও দেশপ্রেম এই বাহিনীকে ভারতের ‘প্রথম প্রতিরক্ষা পংক্তি’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তিনি বলেন, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের পর সীমান্ত রক্ষার প্রয়োজনীয়তা থেকে বিএসএফ গঠিত হয়, এবং কে. এফ. রুস্তমজির নেতৃত্বে ১৯৭১-এর যুদ্ধে এই বাহিনী ভারতীয় সেনার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আরও বলেন, বিএসএফ শুধু সীমান্ত রক্ষায় নয়, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, নির্বাচন, কোভিড মোকাবিলা, এবং নকশাল ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানেও উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। তিনি অপারেশন সিন্ধুর উল্লেখ করে বলেন, “পহেলগামে জঙ্গিদের বর্বর হামলার জবাবে এই অভিযানে মাত্র কয়েক মিনিটে ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়, যা ভারতের গোয়েন্দা ও সামরিক ক্ষমতার প্রতীক।”
অমিত শাহ বিএসএফ-এর দুই শহিদ জওয়ান—মোহাম্মদ ইমতিয়াজ আহমদ ও দীপক চিংখামের সর্বোচ্চ ত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাঁদের নাম ভারতের প্রতিরক্ষা ইতিহাসে সোনার অক্ষরে লেখা থাকবে। তিনি জানান, গত পাঁচ বছরে বিএসএফ ১.১ লাখ কেজি মাদকদ্রব্য বাজেয়াপ্ত করেছে এবং ৭৮ জনের বেশি নকশাল বিদ্রোহীকে নিষ্ক্রিয় করেছে। এছাড়াও, প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি ও ইন-হাউজ উদ্ভাবনে বিএসএফ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
বিএসএফ-এর জওয়ানরা ১ পদ্মবিভূষণ, ২ পদ্মভূষণ, ৭ পদ্মশ্রী, ১ মহাবীর চক্র, ৬ কীর্তি চক্র, ১৩ শৌর্য চক্র, ৫৬ সেনা পদক ও ১,২৪৬টি পুলিশ সাহসিকতা পদক অর্জন করেছেন। অমিত শাহ গর্বের সঙ্গে বলেন, “যতক্ষণ বিএসএফ সীমান্তে আছে, পাকিস্তান এক ইঞ্চিও অগ্রসর হতে পারবে না।” তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে আত্মনির্ভর ভারতের যাত্রায় বিএসএফ-এর অবিচল ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় গৃহসচিব, গোয়েন্দা ব্যুরোর পরিচালক, বিএসএফ-এর মহাপরিচালকসহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব উপস্থিত ছিলেন।