বিশালগড় মহকুমায় চুরির ঘটনা যেন থামার নামই নিচ্ছে না। মন্দির, মসজিদ, স্কুল, কলেজ, দোকান থেকে শুরু করে বাড়ি—কোনো জায়গাই যেন নিরাপদ নয়। গত এক সপ্তাহে এই মহকুমায় প্রায় ২০-২৫টি চুরির ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু পুলিশ প্রশাসন এখনো একটি ঘটনারও কিনারা করতে পারেনি। চোরের দল নেশার টাকা জোগাড় করতে প্রতিনিয়ত তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে, আর সাধারণ মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
সর্বশেষ ঘটনায়, নারাউড়া এলাকার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য মনোরঞ্জন ঘোষের বাড়িতে শনিবার গভীর রাতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এটি তাঁর বাড়িতে দ্বিতীয়বারের মতো চুরির ঘটনা। চোরের দল সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে এবং সমস্ত কিছু তছনছ করে দেয়। ঠাকুর ঘরের সামগ্রীসহ গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র চুরি করে নিয়ে যায় তারা।
জানা গেছে, মনোরঞ্জন ঘোষ কর্মসূত্রে পরিবারসহ রাজ্যের বাইরে অবস্থান করছেন। তাঁর বাড়িতে একজন ভাড়াটিয়া থাকলেও তিনি এক সপ্তাহ আগে চলে গেছেন। বাড়িটি সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকলেও চোরের দল কৌশলে ক্যামেরা বন্ধ করে দেয়। মনোরঞ্জন ঘোষের স্ত্রী দূর থেকে সিসিটিভি ফুটেজ বন্ধ হয়ে যাওয়া দেখতে পান এবং নিকট আত্মীয়দের খবর দেন। রবিবার বিকেলে আত্মীয়রা বাড়িতে গিয়ে দেখেন ঘরের সবকিছু লণ্ডভণ্ড, সুটকেস, আলমারি ভাঙা এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী চুরি হয়ে গেছে।
ঘটনার খবর পেয়ে বিশালগড় থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও তাদের বক্তব্যে হতাশার ছাপ স্পষ্ট। পুলিশ জানিয়েছে, আগের চুরির ঘটনার কোনো কিনারা করতে না পারার মধ্যেই এই দ্বিতীয় চুরির ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, চোরের দল যেন পুলিশের থেকে দুই কদম এগিয়ে রয়েছে।
বিশালগড়ের বাসিন্দারা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। পুলিশ প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার জন্য অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। স্থানীয়রা দাবি করছেন, আরও কঠোর পদক্ষেপ ও নজরদারি না বাড়ালে এই চুরির তাণ্ডব থামানো সম্ভব হবে না।
বিশালগড়ে চুরির এই অব্যাহত ঘটনা শুধু আইনশৃঙ্খলার ব্যর্থতাই নয়, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার উপরও গভীর প্রভাব ফেলছে। পুলিশ প্রশাসনের কাছে জনগণের প্রত্যাশা, দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে এই অরাজকতার অবসান ঘটানো হবে।