বিশাখাপত্তনমে ১১তম আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উদযাপন: প্রধানমন্ত্রী মোদী বললেন, যোগ বিশ্বকে একসূত্রে বাঁধছে
নিউজ ডেস্ক || আজ সমুদ্রতটবর্তী শহর বিশাখাপত্তনমে ১১তম আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উদযাপনের নেতৃত্ব দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রায় ৫ লক্ষ মানুষের সঙ্গে তিনি “কমন যোগ প্রোটোকল” সেশনে অংশ নেন, যা বিশ্বজুড়ে যোগের বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতার প্রতীক হয়ে উঠল। এই বছরের থিম ‘এক পৃথিবী, এক স্বাস্থ্য’ যোগের মাধ্যমে মানবতা ও প্রকৃতির আন্তঃসম্পর্কের ওপর জোর দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, “যোগের মর্ম হল একতা। আজ গোটা বিশ্বকে যোগ একসূত্রে বেঁধেছে।” তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ২০১৪ সালে ভারতের প্রস্তাবে জাতিসংঘে ১৭৫টি দেশ আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উদযাপনের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছিল, যা বৈশ্বিক ঐক্যের এক বিরল দৃষ্টান্ত। তিনি বলেন, “১১ বছর আগে শুরু হওয়া এই যাত্রা আজ কোটি কোটি মানুষের জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে।”
মোদী উল্লেখ করেন, যোগ এখন সীমানা, বয়স বা সক্ষমতার বাইরে গিয়ে সকলের জন্য অভিগম্য হয়েছে। দৃষ্টিহীনরা ব্রেইলে যোগ গ্রন্থ পড়ছেন, মহাকাশে বিজ্ঞানীরা যোগাচর্চা করছেন, এবং গ্রামীণ যুবকেরা যোগ অলিম্পিয়াডে অংশ নিচ্ছেন। “সিডনি অপেরা হাউসের সিঁড়ি থেকে মাউন্ট এভারেস্টের চূড়া—যোগ সব জায়গায় একই বার্তা ছড়াচ্ছে: সকলের জন্য যোগ,” বলেন তিনি।
বিশাখাপত্তনমের প্রাকৃতিক ও উন্নয়নশীল মিলনের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের ‘যোগন্ধ্র অভিযান’-এর ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, মন্ত্রী নারা লোকেশের নেতৃত্বে এই অভিযানে ২ কোটিরও বেশি মানুষ যুক্ত হয়েছেন, যা যোগকে একটি সামাজিক উৎসবে রূপান্তরিত করেছে।
প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, যোগ শুধু ব্যক্তিগত সুস্থতা নয়, প্রকৃতি ও সমাজের কল্যাণের সঙ্গেও জড়িত। “যোগ আমাদের শেখায়, আমরা প্রকৃতির অংশ। মানুষ, মাটি, নদী, প্রাণী—সবকিছুর স্বাস্থ্য একে অপরের ওপর নির্ভরশীল,” বলেন তিনি। তিনি বিশ্বের ক্রমবর্ধমান অস্থিরতার মধ্যে যোগকে ‘পজ বোতাম’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এটি মানবজাতিকে ভারসাম্যে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করছে।
এইমস-এর মতো প্রতিষ্ঠানে যোগের বৈজ্ঞানিক গবেষণার কথা উল্লেখ করে মোদী বলেন, যোগ হৃদরোগ, মানসিক স্বাস্থ্য ও নারী স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তিনি ই-আয়ুস ভিসার ঘোষণা দিয়ে বলেন, যোগকে গ্লোবাল স্বাস্থ্য মডেলে রূপান্তরিত করা হবে। এছাড়া, ‘মন কি বাত’-এর উদ্যোগে তেল ব্যবহার ১০ শতাংশ কমানোর চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে তিনি সুস্থ জীবনযাপনের জন্য যোগ ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের ওপর জোর দেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের রাজ্যপাল সৈয়দ আবদুল নাজির, মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবdy, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামমোহন নাইডু, ডঃ চন্দ্রশেখর পেম্মাসানি, জাধব প্রতাপরাও গনপত্রাও, ভূপতি রাজু শ্রীনিবাস বর্মা প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের নেতৃত্ব ও সুশৃঙ্খল আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেষে আহ্বান জানান, “যোগকে একটি জন আন্দোলনে পরিণত করুন। প্রতিটি ব্যক্তি যোগ দিয়ে দিন শুরু করুন, যাতে সমাজ চাপমুক্ত হয় এবং মানবজাতি একতার সুতোয় বাঁধা যায়।”