সতীদাহ প্রথা বিলোপে রাজা রামমোহন রায়ের ঐতিহাসিক ভূমিকাকে অস্বীকার করে মধ্যপ্রদেশের উচ্চশিক্ষামন্ত্রী ইন্দর সিং পারমারের বিতর্কিত মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি। কংগ্রেস এই বক্তব্যকে ‘ইতিহাস বিকৃতি’ এবং ‘মনুবাদী মানসিকতার প্রকাশ’ বলে অভিহিত করেছে।
বিরসা মুন্ডার ১৫০তম জন্মবার্ষিকীর এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী পারমার বলেন, “রামমোহন রায় ব্রিটিশদের দালাল ছিলেন এবং হিন্দুদের ধর্ম পাল্টানোর কাজে সহায়তা করেছিলেন।” এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রবীর চক্রবর্তী এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানান, বিজেপি ও আরএসএস-এর ‘মনুবাদী দৃষ্টিভঙ্গি’ই রামমোহন রায়ের মতো সমাজসংস্কারকের অবদানকে মেনে নিতে বাধা দিচ্ছে।
বিজ্ঞপ্তিতে কংগ্রেস দাবি করে, সতীদাহ নিষিদ্ধকরণ ছিল নারীর অধিকার ও মানবতা প্রতিষ্ঠার যুগান্তকারী পদক্ষেপ। বিরসা মুন্ডার জন্ম রামমোহন রায়ের মৃত্যুর ৪২ বছর পর হলেও দুজনকে একই প্রেক্ষাপটে তুলে ধরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মন্তব্য করা হয়েছে। পাশাপাশি বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে এখনও সতীদাহ-সদৃশ ঘটনার নজির রয়েছে বলে অভিযোগ তোলা হয়।
প্রবীর চক্রবর্তী বলেন, “নারী সমাজের প্রতি আরএসএস-বিজেপির বিদ্বেষমূলক মানসিকতা দেশে ও রাজ্যে স্পষ্ট হয়ে উঠছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২৮ আগস্ট ২০২৫-এ প্রকাশিত ‘জাতীয় মহিলা সুরক্ষা সম্পর্কিত কমিটি’র রিপোর্ট অনুযায়ী দেশের প্রায় ৪০ শতাংশ নারী নিরাপত্তাহীনতার শিকার।
এই বিতর্ক ভারতের সমাজসংস্কারের ইতিহাস নিয়ে রাজনৈতিক বিভাজনকে আবারও সামনে এনেছে। রাজা রামমোহন রায়ের ভূমিকা নিয়ে বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে মতপার্থক্য ভবিষ্যতে আরও তীব্র হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।


