নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী পোশাক ‘রিসা’ নিয়ে বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরীর কথিত অপমানজনক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্যের রাজনীতি। বুধবার আমবাসায় একটি দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়ার পথে জিতেন্দ্র চৌধুরীর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় অরাজনৈতিক সংগঠন ‘জনজাতি সমাজ’। কালো পতাকা দেখিয়ে এবং ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভকারীরা তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁদের অভিযোগ, জিতেন্দ্র চৌধুরী সম্প্রতি রিসা নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করেছেন, যা জনজাতি সম্প্রদায়ের পাশাপাশি সমগ্র ত্রিপুরার সংস্কৃতিকে কলঙ্কিত করেছে।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, “জিতেন্দ্র চৌধুরী নিজে জনজাতি সম্প্রদায়ের হয়েও এমন মন্তব্য করেছেন, যা অগ্রহণযোগ্য। তাঁকে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে।” এই ঘটনার জেরে আমবাসা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয় এবং নিরাপত্তার ঘেরাটোপে জিতেন্দ্র চৌধুরীকে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছে দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, সিপিআইএমের পক্ষ থেকে আমবাসা টাউন হল থেকে বের হয় পাল্টা বিক্ষোভ মিছিল। জিতেন্দ্র চৌধুরী এই অভিযোগের বিরুদ্ধে পাল্টা দাবি করে বলেন, “আমি যখন বন, তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ছিলাম, তখনই প্রথম রিসাকে সরকারি স্বীকৃতি দিয়েছিলাম। অথচ আজ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বিজেপি সরকার জনগণের দৃষ্টি ঘোরাতে এই নাটক সাজিয়েছে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, “আজকের তথাকথিত জনজাতি সমাজের প্রতিবাদের আড়ালে বিজেপির জনজাতি মোর্চার কর্মীরা সক্রিয় ছিল। এর উদ্দেশ্য সিপিআইএমের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা এবং জনজাতি সমাজকে বিভ্রান্ত করে বিভাজনের রাজনীতি চালানো।”
এই ঘটনা ত্রিপুরার রাজনৈতিক মহলে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিচ্ছে। আগামী নির্বাচনের আগে জনজাতি ভোটব্যাঙ্ককে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে টানাপোড়েন তীব্র হতে পারে। জনজাতি সমাজের দাবি এবং সিপিআইএমের পাল্টা অবস্থানের সংঘাত পাহাড়ের রাজনীতিকে কোন দিকে নিয়ে যাবে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।