নিউজ ডেস্ক || এবছর ত্রিপুরায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ও আনন্দমুখর পরিবেশে দুর্গাপুজো সম্পন্ন হয়েছে। রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে আগরতলার মহারাণী তুলসীবতি গার্লস স্কুলের সামনে আয়োজিত ‘মায়ের গমন ২০২৫’ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। এই অনুষ্ঠানে তিনি রাজ্যবাসীকে শুভ বিজয়া ও দশেরার শুভেচ্ছা জানান এবং রাজ্যে শিল্প, সংস্কৃতি ও সাহিত্যের বিকাশ ও চর্চাকে আরও জোরদার করার সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, গত চার বছর ধরে এই কার্নিভাল আয়োজিত হচ্ছে। প্রথম দুই বছর সিটি সেন্টারের সামনে এই অনুষ্ঠান হলেও, গত বছর থেকে সকলের সাথে আলোচনার মাধ্যমে তুলসীবতি স্কুলের সামনে এটি আয়োজিত হচ্ছে। এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য হলো নান্দনিক ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে পুজোর সমাপ্তি। তিনি বলেন, “এই অনুষ্ঠানে জাতি-জনজাতি সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা একত্রে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিবেশন করেছে, যা আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করবে এবং সম্প্রীতির বার্তাকে শক্তিশালী করবে।”
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, রাজন্য আমলে এই স্থান থেকেই শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রতিমা নিরঞ্জনের প্রথা ছিল। সেই ঐতিহ্যকে সম্মান জানিয়ে তুলসীবতি স্কুল চত্বর থেকে জ্যাকসন গেইট, কামান চৌমুহনী, পোস্ট অফিস চৌমুহনী হয়ে বটতলা দশমীঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই শোভাযাত্রার জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রশাসন।
তিনি আরও বলেন, দুর্গাপুজো বা বিজয়া দশমী শুধু হিন্দু ধর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত হচ্ছে। ত্রিপুরার জনজাতি সম্প্রদায়ের মধ্যেও এবার পুজোর ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে, যা আগে এতটা প্রকট ছিল না। এটি রাজ্যের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সূচক।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য, অর্থমন্ত্রী প্রনজিত সিংহ রায়, পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্তনা চাকমা, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রী টিংকু রায়, উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী কিশোর বর্মন, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অনুরাগ সহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
মুখ্যমন্ত্রী পুজোর সফল ও শান্তিপূর্ণ আয়োজনের জন্য রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, পুলিশ, আগরতলা পুর নিগম, পুজো উদ্যোক্তা, ক্লাব ও সামাজিক সংস্থাগুলোকে ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিবেশিত হয়, যা দর্শকদের মুগ্ধ করে।