নিউজ ডেস্ক || রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন যে, বিরোধী দল সিপিআইএম স্মার্ট মিটার বসানো এবং বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধির বিষয়ে জনগণকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্ত করছে। তিনি দাবি করেন, সিপিআইএম শাসনকালে বিদ্যুৎ মাশুলে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি করা হয়েছিল, যেখানে বর্তমান বিজেপি সরকার মাশুল নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছে।
মন্ত্রী জানান, সিপিআইএম শাসনের শেষ সাত বছরে বিদ্যুৎ মাশুল ১১৬.০৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে ৬২ শতাংশ, ২০১২ সালে ৭.৭৫ শতাংশ, ২০১৪ সালে ৪০.৪৫ শতাংশ এবং ২০১৫ সালে ৫.৮৩ শতাংশ মাশুল বৃদ্ধি করা হয়েছিল। কিন্তু বিজেপি সরকারের আমলে ২০২০ সালে মাশুল ২.৩৪ শতাংশ কমানো হয়, এবং ২০২২, ২০২৪ ও ২০২৫ সালে যথাক্রমে ২.৩৪ শতাংশ, ৭ শতাংশ এবং ৭.১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, “যাঁরা নিজেদের আমলে বিপুল হারে মাশুল বাড়িয়েছিল, তারা আজ বিদ্যুৎ দফতরের সামনে ধর্নায় বসে প্রতিবাদ করছে, এটা হাস্যকর।”
শ্রী নাথ আরও জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দামের ওঠানামার কারণে বিদ্যুৎ মাশুল প্রভাবিত হয়। তিনি দাবি করেন, মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ডলারের দাম বৃদ্ধি সত্ত্বেও বিদ্যুৎ মাশুল নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, সিপিআইএম সরকারের আমলে বিদ্যুৎ খাতের বেসরকারিকরণ শুরু হয়েছিল, যা এখন তাদেরই বিরুদ্ধে অভিযোগ হিসেবে উঠছে।
বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কমিশনের নিয়ম মেনে চলা হচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধির কারণে মাশুল বাড়লেও তা গ্রাহকদের কাছ থেকে এক মাসে না নিয়ে দুই মাসে কিস্তিতে আদায় করা হবে। এছাড়া, যাঁরা মাসে ৪১২ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন, তাঁদের বিল ৩০০৫ টাকা এলেও ১৫০ টাকা রিবেট দেওয়া হয়। বর্ধিত বিলের ৩১৮ টাকা আগামী ছয় মাসে কিস্তিতে নেওয়া হবে।
এদিন তিনি আরও ঘোষণা করেন, বিদ্যুৎ চুরি রোধে এবার ড্রোন ক্যামেরার ব্যবহার করবে সরকার। মন্ত্রী জানান, স্মার্ট মিটার বসানোর মাধ্যমে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ ও দক্ষ করা হচ্ছে, কিন্তু বিরোধী দল এ নিয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তিনি জনগণের প্রতি সঠিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান।