নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরা মৎস্যজীবী ইউনিয়নের উদ্যোগে ১৩ দফা দাবির ভিত্তিতে আজ রাজভবন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়। প্যারাডাইস চৌমুহনি থেকে শুরু হওয়া এই মিছিল শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে রাজভবনের দিকে অগ্রসর হলে সার্কিট হাউস এলাকায় পুলিশের বাধার মুখে আটকে যায়। সেখানে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়, এবং ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধি দল রাজ্যপালের কাছে ১৩ দফা দাবির স্মারকলিপি জমা দেয়।
এদিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার, বিরোধী দলনেতা ও পলিটব্যুরো সদস্য জিতেন্দ্র চৌধুরী, তপশিলি জাতি সমন্বয় সমিতির রাজ্য সম্পাদক সুধন দাস, প্রাক্তন মন্ত্রী রতন ভৌমিক সহ বামপন্থী নেতা ও কর্মী-সমর্থকরা।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মানিক সরকার এই ১৩ দফা দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলেন, বাম আমলে মৎস্য চাষ ও মৎস্যজীবীদের সমৃদ্ধির জন্য গৃহীত পদক্ষেপগুলি রাজ্যের মাছের চাহিদা মেটাতে সফল হয়েছিল। তিনি বর্তমান সরকারের বেসরকারিকরণ নীতির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, এটি মৎস্যজীবীদের জীবিকায় ক্ষতি করছে।
জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, বাম আমলে সরকারি জলাশয়গুলো মৎস্যজীবীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল। ডম্বুর জলাশয় এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়ে জলাশয়গুলো বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছে, যা মৎস্যজীবীদের ক্ষতি করছে।
সুধন দাস অভিযোগ করেন, সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধা মৎস্যজীবীরা পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নীতি দেশীয় মৎস্যজীবীদের সংকটে ফেলেছে, এবং বিদেশি মৎস্য রপ্তানিকারীদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ডম্বুর জলাশয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ বেসরকারি হাতে চলে যাওয়ায় মৎস্যজীবীদের জীবিকা বিপন্ন। রুদ্রসাগর জলাশয়কেও বেসরকারিকরণের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে, যা মৎস্যজীবীদের স্বার্থের বিরুদ্ধে।
এছাড়া, বিদ্যুৎ সমস্যা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, ১০৩২৩ শিক্ষকদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি এই স্মারকলিপিতে উঠে আসে। সার্কিট হাউসের সামনে সভার মাধ্যমে এই কর্মসূচি সম্পন্ন হয়, এবং প্রতিনিধি দল রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি পেশ করে। এই অভিযানে মৎস্যজীবীদের পাশাপাশি জনগণের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বাম নেতৃত্বের তীব্র প্রতিবাদে শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।