২৫ জুন ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করবে বিজেপি, জরুরি অবস্থার অন্ধকার স্মরণে গণতন্ত্র রক্ষার প্রতিজ্ঞা
নিউজ ডেস্ক || আগামীকাল ২৫ জুন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দেশব্যাপী ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করবে, ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থা জারির স্মরণে। এই দিনটি ভারতের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে এক অন্ধকার অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত। উত্তর ত্রিপুরার পদ্মপুরে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘোষণা করেন পানিসাগর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক বিনয় ভূষণ দাস। উপস্থিত ছিলেন বাগবাসা বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক যাদব লাল নাথ এবং উত্তর ত্রিপুরা জেলা বিজেপির সভাপতি কাজল দাস।
বিধায়ক বিনয় ভূষণ দাস বলেন, ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর পরামর্শে রাষ্ট্রপতি ফকরুদ্দিন আলি আহমেদ সংবিধানের ৩৫২ ধারার অধীনে জরুরি অবস্থা জারি করেন। ১৯৭৭ সালের ২১ মার্চ পর্যন্ত টানা ২১ মাস চলা এই সময়কালে নাগরিক অধিকার স্থগিত, বিরোধী নেতাদের গ্রেপ্তার, সংবাদমাধ্যমে কঠোর সেন্সরশিপ আরোপ এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, এই সময়ে দেশে একনায়কতন্ত্র কায়েম করে গণতন্ত্রকে সম্পূর্ণরূপে ক্ষুণ্ণ করা হয়েছিল।
দাস জানান, জরুরি অবস্থার সেই অগণতান্ত্রিক অধ্যায়ের কথা স্মরণ করে বিজেপি প্রতি বছর ২৫ জুনকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে। এই দিনে জনগণকে গণতন্ত্রের মূল্যবোধ রক্ষায় সচেতন ও সক্রিয় থাকার আহ্বান জানানো হয়। তিনি বলেন, “১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থা ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোর ওপর গভীর আঘাত হেনেছিল। এই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের স্বাধীনতা, সাম্য এবং ন্যায়বিচারের মূল্যবোধ রক্ষা করতে হবে।”
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত যাদব লাল নাথ জোর দিয়ে বলেন, “গণতন্ত্র শুধু একটি ব্যবস্থা নয়, এটি জনগণের অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রতীক। জরুরি অবস্থার মতো ঘটনা যেন আর কখনো না ঘটে, তার জন্য প্রতিটি নাগরিককে দায়িত্বশীল হতে হবে।” তিনি নাগরিকদের ভোটাধিকার প্রয়োগ, সামাজিক-রাজনৈতিক সচেতনতা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সক্রিয় থাকার আহ্বান জানান।
বিজেপির জেলা সভাপতি কাজল দাস বলেন, “ইতিহাস জানা এবং পরবর্তী প্রজন্মকে শিক্ষা দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। ২৫ জুন আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে গণতন্ত্র রক্ষা করা কেবল সরকারের নয়, প্রতিটি নাগরিকের কর্তব্য।” তিনি সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বতন্ত্রতা এবং বিরোধী কণ্ঠস্বরের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
এই ‘কালো দিবস’ পালনের মাধ্যমে বিজেপি জনগণকে গণতন্ত্রের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়ার বার্তা দিতে চায়। ১৯৭৫ সালের জরুরি অবস্থার ইতিহাস শুধু অতীতের একটি ঘটনা নয়, বরং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষা ও সচেতনতার প্রেরণা। এই দিনটি প্রতিটি নাগরিককে মনে করিয়ে দেয়—গণতন্ত্রের মূল্যবোধ রক্ষায় সক্রিয় ও সচেতন থাকা আমাদের সকলের দায়িত্ব।