নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরার উপজাতি সম্প্রদায়ের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ তিপরা মথার সমর্থনে রয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিপরা মথার প্রাক্তন সুপ্রিমো তথা এমডিসি প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ। বাকি ১০ শতাংশ মানুষকে দলে যোগ দেওয়ার জন্য সাদর আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি শাসক দল বিজেপির ওপর রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির কৌশল নিয়েছেন। আসন্ন এডিসি এবং ২০২৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে তিনি সামাজিক মাধ্যমে লাইভে এসে এই দাবি করেন।
প্রদ্যোত অভিযোগ করেন, বিলোনিয়ার বল্লামুখা এলাকায় আন্তর্জাতিক সীমানা নির্ধারণ আইন লঙ্ঘন করে বাংলাদেশ সীমান্তে বাঁধ নির্মাণ করছে। এর প্রতিবাদে গতকাল বনকর উত্তর পাড়ায় তিপরা মথার কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেন। এই ঘটনা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে তিপরা মথার শক্তি প্রদর্শনের সুযোগ করে দেয়। প্রদ্যোত বলেন, “এই ঘটনা দেশবাসীকে বুঝিয়ে দিয়েছে যে বিপদজনক পরিস্থিতিতে ভারতের পক্ষে গোটা দেশে আন্দোলনে নামার সামর্থ্য আমাদের রয়েছে।” তিনি তিপরা মথার যুব সংগঠনকে এই কাজের জন্য শুভেচ্ছা জানান।
তিনি আরও বলেন, অতীতে তিপ্রাসাদের দাবি-দাওয়াকে ভারতবিরোধী বলে অভিযোগ করা হতো। কিন্তু বর্তমানে দেশবাসী বুঝতে পেরেছে যে তিপ্রাসারা সবসময় ভারতকে ভালোবেসে এসেছে এবং শুধুমাত্র নিজেদের অধিকারের জন্য লড়াই করেছে। তবে তিপ্রাসাদের মধ্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে কিছু গোষ্ঠী। বিশেষ করে, ককবরক ভাষায় রোমান হরফ ব্যবহারের দাবি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এই সমালোচনার জবাবে প্রদ্যোত স্পষ্ট জানান, তিপরা মথা ককবরক ভাষায় রোমান হরফ ব্যবহারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই চালিয়ে যাবে।
প্রদ্যোত জোর দিয়ে বলেন, “ককবরক ভাষার জন্য রোমান লিপি ব্যবহারের দাবি ত্রিপুরার আদিবাসীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলন। আমরা এই দাবির সঙ্গে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছি।” তিনি ভারতীয় সংবিধানের অষ্টম তফসিলে ককবরক ভাষাকে শুধুমাত্র দেবনাগরী বা বাংলা লিপির মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, মিজোরামের মিজো, মেঘালয়ের গারো, খাসি ও জৈন্তিয়া ভাষাগুলো রোমান লিপি ব্যবহার করে এবং এই নজির ত্রিপুরাতেও অনুসরণ করা উচিত। তিনি রাজ্য সরকারের কাছে ককবরক ভাষার জন্য রোমান লিপির স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি দাবি করেন, “৯০ শতাংশ তিপ্রাসা আমার সঙ্গে রয়েছে। বাকি ১০ শতাংশ যারা নেই, তারা রাজনৈতিক সুবিধা পেলে আমার সঙ্গে যোগ দেবে। আমি তাদের সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।” এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি আসন্ন নির্বাচনের আগে বিজেপির ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। তিপরা মথার এই আন্দোলন এবং প্রদ্যোতের নেতৃত্ব ত্রিপুরার রাজনৈতিক মঞ্চে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।