নিউজ ডেস্ক || ভারতের গোপন সামরিক তথ্য পাকিস্তানে পাচারের অভিযোগে হরিয়ানার জনপ্রিয় ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রাকে গ্রেপ্তার করেছে হিসার পুলিশ। ‘ট্রাভেল উইথ জো’ নামে তাঁর ইউটিউব চ্যানেলের আড়ালে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর হয়ে কাজ করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন পাকিস্তান হাইকমিশনে কর্মরত এহসান-উর-রহীম ওরফে দানিশ।
তদন্তে জানা গেছে, জ্যোতি পাকিস্তান সফরের সময় আইএসআই-এর সন্দেহভাজন এজেন্ট আলি আহওয়ান, শাকির ও রানা শাহবাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তাঁর মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও অন্যান্য গ্যাজেট ফোরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ২০২৩ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে তাঁর দেশ-বিদেশ সফরের রেকর্ডও খতিয়ে দেখছে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো।
এই চক্রে জড়িত থাকার সন্দেহে পাঞ্জাবের গজালা, ক্যারানার নোমান ইলাহী, নুহ-র আরমান ও দেবিন্দর সিংয়ের নাম সামনে এসেছে। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশের ক্যারানা শহর এখন তদন্তের কেন্দ্রবিন্দু। নোমান ইলাহীকে আইএসআই-এর অন্যতম বড় এজেন্ট হিসেবে সন্দেহ করা হচ্ছে। পাকিস্তানে বসে ইকবাল কানা, দিলশাদ মির্জা, হমিদা ও শাহিদের নামও ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িয়েছে। শাহিদ পাকিস্তান থেকে দুবাই, আফগানিস্তান ও মরক্কোতে আইএসআই-এর চর নিয়োগের কাজে যুক্ত ছিল।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, জ্যোতির পাকিস্তান সফরের সমস্ত খরচ বহন করেছিল দানিশ। তাঁকে আইএসআই-এর “অ্যাসেট” হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। পহেলগাঁও হামলার সময় জ্যোতি পাকিস্তানের পক্ষে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ। তাঁর কাশ্মীর সফরে কাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অভিযুক্তরা কোডনেম ব্যবহার করে পাকিস্তানি নম্বর ভিন্ন নামে সেভ করতেন। ইউপিআই ও ডিজিটাল মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের তথ্যও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। ক্যারানা ও পার্শ্ববর্তী এলাকা পূর্বেও আইএসআই-এর কার্যকলাপের কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ২০২৩ সালে কান্ধলার সরদার আলি, ২০২১ সালে দরভাঙ্গা রেলওয়ে বিস্ফোরণ মামলায় সেলিম ও কফিল, এবং ১৯৯৫ সালে ইকবাল কানার গ্রেপ্তারের ঘটনা এই অঞ্চলের সংশ্লিষ্টতার ইতিহাস তুলে ধরছে।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই চক্রের পুরো নেটওয়ার্ক উন্মোচনের জন্য তৎপর। জ্যোতির গ্রেপ্তার ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য নতুন হুমকির ইঙ্গিত দিচ্ছে। তদন্তে আরও তথ্য প্রকাশের অপেক্ষায় দেশ।