বিশ্বমানের আধ্যাত্মিক পর্যটন কেন্দ্রের স্বপ্ন দেখছে ত্রিপুরা
নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরার উদয়পুরের মাতাবাড়ির বনদুয়ারে আজ এক ঐতিহাসিক দিনে ৫১ শক্তিপীঠ পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ভূমি পূজন সম্পন্ন হলো। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা ঘোষণা করেছেন যে, এই পার্কটি একটি বিশ্ববিখ্যাত আধ্যাত্মিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে। তাঁর মতে, আজকের দিনটি ত্রিপুরাবাসীর জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই পার্কে ভারতীয় উপমহাদেশের ৫১টি পবিত্র শক্তিপীঠের প্রতিরূপ স্থাপন করা হবে, যেখানে পৌরাণিক মতে মা সতীর খন্ডিত দেহাবশেষ পতিত হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রচেষ্টায় এবং তাঁর দিকনির্দেশনা ও অনুপ্রেরণায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে বলে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে ধন্যবাদ জানান। পর্যটন দপ্তরের উদ্যোগে প্রায় ৯৭.৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই পার্কটি নির্মিত হবে। মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, একজন মানুষের পক্ষে সারা জীবনে ৫১টি শক্তিপীঠ দর্শন করা সম্ভব না হলেও, উদয়পুর বনদুয়ারে এলে তা সম্ভব হবে।
এই পার্ক ত্রিপুরার আর্থ-সামাজিক মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এটি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বেকারদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে, রাজ্যের জিডিপি বাড়াবে এবং বৈদেশিক মুদ্রার আগমনও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও, পর্যটন শিল্পের বিকাশের ফলে পরিবহন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের এবং রাজ্যে উৎপাদিত হস্ত ও কারুশিল্প সামগ্রীর বিক্রি বৃদ্ধি পাবে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, এই পার্ক রাজ্যের জাতি-জনজাতি গোষ্ঠীর শিল্প, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। তিনি আশা করেন, একদিন ৫১ শক্তিপীঠ পার্কের জন্য বনদুয়ারের নাম সারা দেশের সঙ্গে বিশ্বেও ছড়িয়ে পড়বে এবং বনদুয়ার মহামিলন ক্ষেত্র হয়ে উঠবে। এই পার্কে ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় নটরাজ মূর্তি স্থাপিত হবে।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায় বলেন, এই তীর্থস্থান ত্রিপুরাকে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেবে এবং এটি ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক চেতনার এক মিলনক্ষেত্র হয়ে উঠবে। পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী সনাতন ধর্মকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম হিসেবে উল্লেখ করে বলেন যে, হিন্দু ধর্মের প্রসার ও বিকাশে ৫১ শক্তিপীঠ স্থাপন করা হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, ত্রিপুরার পর্যটন ক্ষেত্রগুলি একদিন বিশ্বের দরবারে পরিচিতি লাভ করবে।
অনুষ্ঠানে বিধায়ক অভিষেক দেবরায়, পর্যটন দপ্তরের অধিকর্তা প্রশান্ত বাদল নেগী, মাতাবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারপার্সন শিল্পী দাস, গোমতী জিলা পরিষদের সভাধিপতি দেবল দেবরায়, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, বিধায়ক জিতেন্দ্র মজুমদার, গোমতী জেলার জেলাশাসক রিঙ্কু লাথের, পুলিশ সুপার বিজয় দেববর্মা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।