নিউজ ডেস্ক || বিজেপি সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে শনিবার ত্রিপুরার রাজপথে বিক্ষোভ মিছিল বের করে প্রদেশ কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস ভবন থেকে শুরু হওয়া এই মিছিল মহাকরণের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সার্কিট হাউস এলাকায় একটি জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু রাধানগরে পৌঁছতেই পুলিশ মিছিলটি আটকে দেয়, যার ফলে উত্তেজনা ছড়ায় এবং পুলিশের সঙ্গে কংগ্রেস নেতা-কর্মীদের বাকবিতন্ডা শুরু হয়।
প্রদেশ কংগ্রেসের বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি দাবি করেন, সার্কিট হাউসে জনসভার জন্য প্রশাসনের কাছ থেকে আগাম অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ সুপার নমিত পাঠক এই দাবি অস্বীকার করে বলেন, কংগ্রেসের তরফে জনসভার জন্য কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি, যার কারণে এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশিস কুমার সাহা বলেন, “বিজেপি সরকার নির্বাচন কমিশনকে নিজেদের শাখা সংগঠনের মতো ব্যবহার করে ভোট কারচুপির মাধ্যমে দেশে এবং ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসছে। নির্বাচন কমিশনকে নগ্নভাবে ব্যবহার করছে শাসক দল।” তিনি আরও জানান, “ভোট চোর গদি ছোড়” স্লোগানকে সামনে রেখে কংগ্রেস গোটা দেশে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি চালাচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপির নির্দেশে পুলিশ রাধানগরে মিছিল আটকে দিয়ে কংগ্রেসের জনসভা বানচাল করার চেষ্টা করেছে এবং বিরোধীদের কণ্ঠরোধের ষড়যন্ত্র করছে।
বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ পুলিশের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “পুলিশ এখন বিজেপি নেতাদের পা চাটছে। মন্ডল নেতাদের নির্দেশে কাজ করছে, নিজেদের দায়িত্ববোধ ভুলে গেছে।” তিনি আরও বলেন, “গত ১১ বছর ধরে বিজেপি সরকার দেশের জনগণের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। সংসদে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। দেশে অরাজকতা চলছে, আর সরকার শুধু পুঁজিপতিদের স্বার্থ রক্ষা করছে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “জনগণ বিজেপিকে ক্ষমতায় এনে ভুল করেছে। কংগ্রেস জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য লড়াই চালিয়ে যাবে।”
কংগ্রেসের পরিকল্পনা অনুযায়ী, মহাকরণ অভিযানের পর সার্কিট হাউসে জনসভা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রশাসন তিনবার জনসভার স্থান পরিবর্তন করে এবং শেষ পর্যন্ত রাধানগরে মিছিল আটকে দেয়। সুদীপ রায় বর্মণ দাবি করেন, এটি বিজেপি মন্ডল নেতাদের নির্দেশে করা হয়েছে। তিনি বলেন, “কংগ্রেসের প্রতিবাদ কর্মসূচি কেউ আটকাতে পারবে না। আমরা জনগণের পাশে থাকব এবং তাদের অধিকারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাব।”
পুলিশ সুপার নমিত পাঠক জানান, জনসভার জন্য কোনো অনুমতি না থাকায় প্রশাসনের তরফে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাধানগরে কিছুক্ষণের জন্য তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়।
কংগ্রেস নেতারা জানিয়েছেন, তারা এই প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন এবং জনগণের অধিকার রক্ষায় তাদের আন্দোলন জোরদার করবেন।