নবরাত্রির প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী মোদীর জাতির উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা
নিউজ ডেস্ক || নবরাত্রি উৎসবের প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীকে ‘স্বদেশি’ পণ্যের ব্যবহার বাড়ানোর এবং আত্মনির্ভর ভারত গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আত্মনির্ভরতা কেবল একটি সরকারি প্রকল্প নয়, বরং এটি জাতীয় চরিত্রে পরিণত হওয়া উচিত। দেশীয় শিল্প, বিশেষ করে এমএসএমই (MSME) খাত, এই লক্ষ্য অর্জনের মূল স্তম্ভ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের দেশের মানুষের প্রয়োজনীয় পণ্যগুলির অনেককেই আমরা নিজেরা তৈরি করতে পারি। বিদেশি পণ্যের উপর অতি নির্ভরতা ভাঙার সময় এসেছে। ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ পণ্য কিনে আমাদের যুবসমাজের পরিশ্রম, দক্ষতা ও উদ্ভাবনী শক্তিকে সমর্থন করতে হবে।” তিনি প্রতিটি বাড়ি ও দোকানকে স্বদেশি পণ্যের প্রতীক করে তোলার আহ্বান জানান, যা দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে এবং কর্মসংস্থান বাড়াবে।
প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা আন্দোলনের স্বদেশি আন্দোলনের সঙ্গে আত্মনির্ভরতার তুলনা করে বলেন, “যেমন স্বাধীনতার সময় স্বদেশি আন্দোলন জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল, তেমনি আত্মনির্ভরতার এই আন্দোলন দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির পথ প্রশস্ত করবে।”
ভাষণের দ্বিতীয় অংশে প্রধানমন্ত্রী একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সংস্কারের ঘোষণা করেন। তিনি জানান, ২২ সেপ্টেম্বর, নবরাত্রির প্রথম দিন থেকে ‘জিএসটি বাচত উৎসব’ চালু হবে। এই উদ্যোগের লক্ষ্য সাশ্রয়ী বাজার তৈরি করা এবং বিনিয়োগের পরিবেশকে আরও উন্নত করা। নতুন জিএসটি কাঠামোতে দুটি প্রধান স্ল্যাব—৫% এবং ১৮%—কার্যকর হবে। পূর্বে ১২% করের আওতায় থাকা পণ্যগুলি এখন ৫%-এ এবং ২৮% করের অধিকাংশ পণ্য ১৮%-এ চলে আসবে। তবে বিলাসপণ্য ও ‘সিন গুডস’-এর ক্ষেত্রে ৪০% পর্যন্ত ‘কম্পেনসেশন সেস’ থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই সংস্কার সাধারণ মানুষের খরচ কমাবে, ক্রয় ক্ষমতা বাড়াবে এবং অর্থনীতিতে গতি আনবে। এটি কৃষক, মধ্যবিত্ত, গৃহিণী ও শিক্ষার্থী—সবার জন্য উপকারী।”
ভাষণের শেষে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে নবরাত্রিতে স্বদেশি পণ্য ব্যবহার ও দেশীয় শিল্পকে সমর্থন করার প্রতিজ্ঞা নিতে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আসুন, এই নবরাত্রিতে আমরা আত্মনির্ভর ভারত গড়ার যাত্রায় সক্রিয়ভাবে অংশ নিই।”এই বার্তা কেবল একটি রাজনৈতিক বক্তব্য নয়, বরং ভারতীয় অর্থনীতি ও সমাজের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা। আত্মনির্ভর ভারতের এই আহ্বান কতটা বাস্তবায়িত হবে, তা আগামী দিনে দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে।