নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরার গ্রামীণ কারিগর ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য সরাসরি ডিজিটাল বাজারের দোর খুলে দিল ‘পজিটিভ বার্তা’ সংস্থার উদ্যোগ ‘E-হাট’। রবিবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ই-মার্কেটপ্লেসের উদ্বোধনের মাধ্যমে রাজ্যের গ্রামীণ অর্থনীতিতে আত্মনির্ভরতার নতুন অধ্যায় শুরু হলো।
‘E-হাট’ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো মধ্যস্বত্বভোগীদের বাদ দিয়ে গ্রামীণ শিল্পীদের পণ্য সরাসরি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। মাটির পুতুল, বাঁশের হস্তশিল্প, ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও লোকজ অলংকার—এখন থেকে এসব পণ্য অনলাইনে বিক্রি হবে। এর ফলে কারিগররা ন্যায্য মূল্য পাবেন এবং তাঁদের সৃজনশীলতা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে।
ত্রিপুরার গ্রামীণ অর্থনীতি দীর্ঘদিন ধরে কৃষি ও হস্তশিল্পের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বিপণনের অভাব, প্রযুক্তিগত জ্ঞানের ঘাটতি এবং বাজারে প্রবেশের সুযোগের অপ্রতুলতার কারণে এই শিল্পগুলোর বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ‘E-হাট’ সেই বাধা দূর করে গ্রামভিত্তিক উৎপাদনকে নতুন গতি দিচ্ছে। প্রকল্পটি শুধু বাণিজ্যিক প্ল্যাটফর্ম নয়, গ্রামীণ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ডিজিটাল প্রচারের মাধ্যমও বটে।
‘পজিটিভ বার্তা’র কর্ণধাররা জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার, কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও ডিজিটাল প্রচারকদের সম্মিলিত প্রয়াসে গ্রামীণ শিল্পের গল্প বিশ্বের দরবারে পৌঁছাবে। “আমরা শুধু পণ্য বিক্রি করছি না, গ্রামের সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতার মূল্য তুলে ধরছি,” বলেছেন সংস্থার একজন প্রতিনিধি।
তরুণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে এই প্রকল্প নিয়ে উৎসাহের অন্ত নেই। অনেকে মনে করছেন, ‘E-হাট’ ভবিষ্যতে রাজ্যে বিকল্প কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত খুলে দেবে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, টেকসই সাফল্যের জন্য কারিগরদের ডিজিটাল প্রশিক্ষণ, শক্তিশালী নেটওয়ার্ক অবকাঠামো এবং নির্ভরযোগ্য লজিস্টিক সাপোর্ট অপরিহার্য।
উদ্বোধনের দিনটিকে ত্রিপুরার গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত করছেন পর্যবেক্ষকরা। ‘E-হাট’ কেবল অর্থনৈতিক উন্নয়নই নয়, স্থানীয় সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও ডিজিটাল ভারতের সঙ্গে গ্রামকে যুক্ত করার একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চলেছে। আগামী দিনগুলোতে এই প্ল্যাটফর্ম কতটা সাফল্য অর্জন করে, সেটাই এখন দেখার।


