নিউজ ডেস্ক || বিহার বিধানসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ও শেষ দফার ভোটগ্রহণ শেষ হতেই মঙ্গলবার প্রকাশিত বুথ ফেরত সমীক্ষায় সরকারি জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) ২৪৩ আসনের বিধানসভায় স্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে চলেছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে, যদিও বিশ্লেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে এই ধরনের সমীক্ষা সবসময় চূড়ান্ত ফলের সঙ্গে মেলে না।
দু’দফায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় ১২২টি আসনে ৬৭.১৪ শতাংশ ভোট পড়েছে, যা প্রথম দফার ৬৪.৬৬ শতাংশের চেয়ে বেশি। এটি রাজ্যের সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলির মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ ভোটদান। সন্ধ্যা ৬টায় ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর পিপলস পালস, পিপলস ইনসাইট, মেট্রিক্স এবং পি-মার্কের মতো সংস্থাগুলি তাদের অনুমান প্রকাশ করে।
এই সমীক্ষাগুলি অনুসারে, বিজেপি-জেডিইউ নেতৃত্বাধীন এনডিএ ১৩৩ থেকে ১৬৭টি আসন পেতে পারে, যা সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ১২২টির চেয়ে অনেক বেশি। বিরোধী মহাগঠবন্ধন (আরজেডি-কংগ্রেস-বাম জোট) ৭০ থেকে ১০২টি আসনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে। প্রশান্ত কিশোরের নতুন দল জন সুরাজ পার্টি (জেএসপি) বেশিরভাগ অনুমানে ০ থেকে ৫টি আসন পেতে পারে।
নির্বাচনের পটভূমি বিহারের পরিবর্তনশীল রাজনৈতিক চিত্রের সঙ্গে জড়িত। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের এনডিএ তৃতীয়বারের জন্য “ডাবল ইঞ্জিন” সরকারের উন্নয়ন ও চাকরির প্রতিশ্রুতি নিয়ে লড়ছে। মহাগঠবন্ধন বেকারত্ব, সামাজিক ন্যায় এবং ভোটার তালিকায় কথিত অনিয়মকে ইস্যু করেছে। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব নিজেকে যুব বিকল্প হিসেবে তুলে ধরেছেন।
ভোটের পর দুই পক্ষের নেতারা আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেছেন। বিজেপি নেতা ও প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তারকিশোর প্রসাদ বলেন, “ডাবল ইঞ্জিন সরকার বিহারের উন্নয়ন করেছে, জনতার আশীর্বাদে আমরা সেবা চালিয়ে যাব।” অন্যদিকে আরজেডি সাংসদ মনোজ ঝা সমীক্ষা খারিজ করে বলেন, “প্রথম দফায় যে পরিবর্তন দেখা গেছে, তা এখন বড় ঢেউ হয়ে এনডিএ-কে উৎখাত করবে।” কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জীতন রাম মাঞ্জি দ্বিতীয় দফায় কমপক্ষে ৮০টি আসনে এনডিএ-র জয়ের দাবি করেছেন।
যদি এই অনুমান সত্যি হয়, তবে বেকারত্বের মতো চ্যালেঞ্জের মধ্যেও এনডিএ-র ক্ষমতা ধরে রাখা স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দেবে। তবে ২০১৫-এ মহাগঠবন্ধনের জয়কে কম আঁকার ইতিহাস সতর্কতার পরামর্শ দেয়।
এখন সবার চোখ ১৪ নভেম্বরের দিকে। সকাল ৮টা থেকে ৩৮টি জেলায় কঠোর নিরাপত্তায় ভোটগণনা শুরু হবে। ফলাফল কেবল পরবর্তী সরকারই নির্ধারণ করবে না, ভবিষ্যতের জাতীয় জোটেও প্রভাব ফেলবে, যা বিহারের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরে।


