নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরার শাসক জোটের শরিক দল তিপ্রা মথার সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ বুধবার এক সাংগঠনিক কর্মসূচিতে সরকারের বিরুদ্ধে কড়া সুরে বক্তব্য রাখেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তিপ্রাসাদের দাবিগুলো বাস্তবায়িত না হলে তিপ্রা মথা সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করবে। এমনকি অধিকার না পেলে আর বেশিদিন সরকারে থাকবেন না তিপ্রা মথা। এই ঘোষণায় রাজনৈতিক মহলে তীব্র গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে, যদিও শাসক বিজেপির পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ বলেন, “তিপ্রাসাদের দাবি না মেনে চললে আগামী নির্বাচনে বিজেপি, সিপিআই(এম) বা কংগ্রেস কেউই জনজাতিদের থেকে একটি ভোটও পাবে না। টাকার বিনিময়ে তিপ্রাসাদের অধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না। টাকা দিয়ে জনজাতিদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলতে দেওয়া হবে না।” তিনি রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমি ও তহবিল সংক্রান্ত নীতির তীব্র সমালোচনা করেন।
ভিলেজ কমিটি নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ার জন্যও শাসক বিজেপিকেই দায়ী ठারিয়ে প্রদ্যোত বলেন, “বিজেপি জানে, পাহাড়ে একটি আসনও জিততে পারবে না। তাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গ্রাম কমিটি নির্বাচন বিলম্ব করছে। যদি নির্বাচন হয়ে থাকত, বিজেপি একটি আসনও জিততে পারত না।” তাঁর মতে, ভিলেজ কমিটি নির্বাচন শেষ হয়ে ৯ বছর হয়ে গেছে।
টিটিএএডিসি-এর ভূমি অধিকারের প্রশ্ন তুলে প্রদ্যোত বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার সরাসরি তহবিল দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে, কিন্তু তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। রাজ্য সরকার বলছে, বিজেপিতে যোগ দিলে তহবিল পাবে। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে বলে, আঞ্চলিক দলে কেন আছো? কংগ্রেসে যোগ দিলে পাবে। সিপিআই(এম)-এরও একই অবস্থা।” তিনি দাবি করেন, টিটিএএডিসি-এর বনভূমি আদিবাসীদের নামে দেওয়া উচিত ছিল, কিন্তু তা হয়নি। তারা এই ক্ষমতা আদিবাসীদের দিতে চায় না, বরং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে রাখতে চায়। পুরো উত্তর-পূর্বে ত্রিপুরা ব্যতীত ভূমি অধিকার এডিসিরই রয়েছে, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নয়।
তিপ্রাসা চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়িত না হলে এবং তিপ্রাসাদের অধিকার সুনিশ্চিত না করলে সমর্থন প্রত্যাহারের এই হুমকি শাসক জোটের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি ত্রিপুরার জনজাতি রাজনীতিতে বড় টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে।


