রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির প্রথম সভায় মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার জোরালো বার্তা: সংস্কৃতির গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে
নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরার ঐতিহ্যবাহী মিশ্র সংস্কৃতিকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে এবং সংস্কৃতির উন্নয়নকে গণআন্দোলনে রূপান্তরিত করার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা। আজ সচিবালয়ের ২ নম্বর কনফারেন্স হলে পুনর্গঠিত রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির প্রথম সভায় এই বার্তা দেন তিনি। ৩৯ সদস্যের এই কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই।
সভার শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী পুনর্গঠিত কমিটির সদস্যদের সঙ্গে পরিচিত হন এবং সংস্কৃতির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “সংস্কৃতি একটি সমাজের অলংকার। বর্তমানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উদ্ভাবনী চিন্তাধারায় আমাদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির আধুনিকীকরণ করতে হবে।” তিনি জাতি-জনজাতির ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি সংরক্ষণের পাশাপাশি নতুনত্ব আনার প্রয়াস নিতে যুব সমাজকে আকৃষ্ট করার উপর জোর দেন। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দক্ষতা উন্নয়নের বার্তার প্রেক্ষিতে শিল্পীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং দৃষ্টিনন্দন উপস্থাপনার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। গ্রাম পর্যায় থেকে প্রতিভাবান শিল্পীদের খুঁজে বের করে তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের তাগিদ দেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আধুনিকতার চাপে কীর্তন, পুতুল নাচ, যাত্রার মতো ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি হারিয়ে যাওয়ার পথে। এগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করতে উদ্ভাবনী পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা এবং রাজ্যের ঐতিহ্য ও কৃষ্টি সংরক্ষণে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী সভায় বলেন, জাতি-জনজাতি নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজ্যের সংস্কৃতি রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি. কে. চক্রবর্তী স্বাগত বক্তব্যে দপ্তরের বছরব্যাপী কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১৯টি নতুন সাংস্কৃতিক কর্মসূচি পঞ্জিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ২৪টি সাংস্কৃতিক সংস্থাকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তিনি রাজ্যের সিগনেচার ফেস্টিভেল, ত্রিপুরা আইডল এবং কালচারেল পলিসি প্রণয়নের উদ্যোগের প্রস্তাবও রাখেন।
সভায় পর্যটন দপ্তরের অধিকর্তা প্রশান্ত বাদল নেগি, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য সহ বিভিন্ন স্তরের আধিকারিক এবং কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সকলে রাজ্যের সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে নিজ নিজ মতামত তুলে ধরেন।
এই সভা ত্রিপুরার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।