নিউজ ডেস্ক || আসামের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা শুক্রবার ধুবরি জেলার সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে “চরম উদ্বেগজনক” আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এর পেছনে সুপরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানোর ষড়যন্ত্র কাজ করছে। তিনি দাবি করেছেন, এই ঘটনার সঙ্গে প্রতিবেশী দেশের মৌলবাদী শক্তির যোগসূত্র রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এক্স-এ এক বিস্তারিত পোস্টে জানিয়েছেন, বকর ঈদের পরদিন ধুবরির একটি হনুমান মন্দিরের সামনে গরুর কাটা মাথা ফেলে উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। শান্তি কমিটি ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণে এলেও, পরদিন একই স্থানে আরেকটি গরুর মাথা রাখা হয়, যা উত্তেজনাকে আরও উস্কে দেয়। এছাড়া, কিছু এলাকায় পাথর ছোড়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এক চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করে বলেন, ঈদের আগের দিন ‘নবীন বাংলা’ নামে একটি সংগঠনের নামে উসকানিমূলক কবিতা ও ধুবরিকে বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি-সংবলিত পোস্টার শহরের বিভিন্ন স্থানে, এমনকি সেনাবাহিনীর সিগন্যাল অবকাঠামোর ওপরেও সাঁটানো হয়। তিনি বলেন, “ধুবরিতে একটি মৌলবাদী গোষ্ঠী সক্রিয় হয়েছে, যারা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করে না। আমরা এই সাম্প্রদায়িক শক্তিকে নির্মূল করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।”
শুক্রবার সকাল ১১টায় ধুবরি পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি ঘোষণা করেন, “আজ রাত থেকে ধুবরিতে শুট অ্যাট সাইট নির্দেশ কার্যকর হবে। পাথর ছোড়া বা যেকোনো বেআইনি কার্যকলাপে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।” তিনি কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ধুবরিকে বাংলাদেশি মৌলবাদী শক্তির নিশানা হতে দেব না। এ রাজ্যে ধর্মীয় বিভাজনের কোনো জায়গা নেই।”
প্রশাসন ইতিমধ্যে ধুবরি শহর ও আশপাশের এলাকায় উচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে শান্তি বজায় রাখতে এবং গুজবে কান না দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে প্রশাসন।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, অপরাধে জড়িত সকল দুষ্কৃতীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।