নিউজ ডেস্ক || আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবস উপলক্ষে আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য পরিষেবাকে আরো গতিশীল করতে রাজ্য সরকার ৩৩২ জন নার্সিং অফিসার নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এছাড়াও, চুক্তির ভিত্তিতে আরো ১০০ জন নার্স নিয়োগের জন্য অর্থ দপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ মঞ্জুর হয়েছে। ত্রিপুরা নার্সিং কাউন্সিলের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নার্সিং পেশার গুরুত্ব ও এর অর্থনৈতিক তাৎপর্যের উপর জোর দেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আজ ২০৫তম আন্তর্জাতিক নার্সেস দিবস উদযাপিত হচ্ছে, যা মহিয়সী নারী ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের জন্মদিনের স্মরণে পালিত হয়়। তিনি ‘লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প’ হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। ক্রিমিয়ার যুদ্ধে তাঁর অসামান্য সেবার কথা উল্লেখ করে ডাঃ সাহা বলেন, তাঁর অবদানের ফলেই বিশ্বজুড়ে নার্সিং প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এ বছরের নার্সেস দিবসের থিম ‘আমাদের নার্সগণ আমাদের ভবিষ্যত, নার্সদের যত্ন নিন, অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করুন’ নার্সদের স্বাস্থ্য, সুরক্ষা ও এই পেশার অর্থনৈতিক গুরুত্বের উপর আলোকপাত করে।
তিনি আরো বলেন, নার্সরা হাসপাতালে রোগীদের প্রাথমিক সেবা প্রদান করে ‘ফ্রন্ট রানার’ হিসেবে কাজ করেন। রোগীদের রক্তচাপ পরীক্ষা, ঔষধ প্রদান, ইনজেকশন দেওয়া থেকে শুরু করে মুমূর্ষু রোগীদের মুখে হাসি ফোটানোর কাজে নার্সদের ভূমিকা অতুলনীয়। তবে, রোগীর তুলনায় নার্সিং স্টাফের সংখ্যা কম থাকায় এ বিষয়ে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আগরতলা নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউটকে গভর্নমেন্ট নার্সিং কলেজে উন্নীত করা হয়েছে। উদয়পুরে ৪০ আসনের এএনএম নার্সিং প্রতিষ্ঠানকে জিএনএমে রূপান্তরিত করা হয়েছে এবং দুর্জয়নগরের নার্সিং প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, নার্সিং প্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের পরিকল্পনা চলছে। ২০২৪ সালে ১৫৩ জন নার্সিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্য পরিষেবায় বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য বাইরের বিনিয়োগকারীরাও রাজ্যে আসছেন।
অনুষ্ঠানে সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা মন্ত্রী টিংকু রায়, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ তপন মজুমদার, পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ দপ্তরের অধিকর্তা ডাঃ অঞ্জন দাস, মেডিকেল এডুকেশনের অধিকর্তা ডাঃ এইচ পি শর্মা এবং ত্রিপুরা নার্সিং কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার রেবিকা ডার্লং উপস্থিত ছিলেন।
নার্সিং পেশাকে সম্মানজনক ও আকর্ষণীয় করতে এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবাকে আরো শক্তিশালী করতে সরকারের এই উদ্যোগ নতুন দিগন্তের সূচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।