প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাত ধরে ৫১ হাজার যুবক-যুবতীর হাতে নিয়োগপত্র, রোজগার মেলায় জাতি গঠনের নতুন অধ্যায়
নিউজ ডেস্ক || প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের ৪৭টি স্থানে অনুষ্ঠিত ১৬তম রোজগার মেলায় অংশ নিয়ে ৫১ হাজারেরও বেশি যুবক-যুবতীর হাতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থায় নিয়োগপত্র তুলে দেন। এই উদ্যোগে নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা রেল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ডাক বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, আর্থিক পরিষেবা এবং শ্রম ও কর্মসংস্থানের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে যোগ দেবেন। এখন পর্যন্ত এই মেলার মাধ্যমে দেশে ১০ লক্ষেরও বেশি নিয়োগপত্র বিতরণ করা হয়েছে, যা যুব সমাজের ক্ষমতায়ন ও জাতি গঠনে এক নতুন মাইলফলক।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, “আজকের এই যুবক-যুবতীরা জনসেবার মাধ্যমে দেশসেবার নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করছেন। আপনাদের লক্ষ্য এক—‘নাগরিক প্রথম’ নীতির আলোকে দেশের উন্নয়ন।” তিনি ভারতের দুটি অসীম শক্তি—জনসংখ্যার গঠন (ডেমোগ্রাফি) এবং গণতন্ত্র (ডেমোক্রেসি)—এর উপর জোর দিয়ে বলেন, “এই দুই শক্তির জোরে ভারত আজ বিশ্বমঞ্চে নিজেকে শক্তিশালীভাবে প্রতিষ্ঠা করছে। বিশ্বজুড়ে ভারতের যুবশক্তির প্রতি শ্রদ্ধা বেড়েছে।”
সম্প্রতি পাঁচটি দেশ সফরের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রতিরক্ষা, ফার্মাসিউটিক্যাল, ডিজিটাল প্রযুক্তি, শক্তি ও রেয়ার আর্থ খনিজ খাতে সই হওয়া চুক্তিগুলি যুব সমাজের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের দ্বার খুলবে। তিনি বলেন, “আজকের প্রজন্ম উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও উদ্ভাবনী। স্টার্টআপ, গবেষণা ও উদ্ভাবন-ভিত্তিক অর্থনীতি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।”
সরকারের কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমপ্লয়মেন্ট লিঙ্কড ইনসেনটিভ স্কিমের মাধ্যমে প্রথম বেসরকারি চাকরি পাওয়া যুবকদের ১৫,০০০ টাকা দেওয়া হবে। এই প্রকল্পে ১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, যার লক্ষ্য ৩.৫ কোটি নতুন চাকরি সৃষ্টি।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, পিএম আওয়াস যোজনায় ৪ কোটি বাড়ি তৈরি হয়েছে, স্বচ্ছ ভারত অভিযানে ১২ কোটি শৌচালয় নির্মাণ হয়েছে, এবং উজ্জ্বলা যোজনায় ১০ কোটি এলপিজি সংযোগ দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পগুলি গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। সূর্য ঘর মুফত বিজলী যোজনা এবং নামো ড্রোন দিদি প্রকল্পের মাধ্যমে যথাক্রমে সৌরশক্তি ও গ্রামীণ মহিলাদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের পথ খুলেছে।
লক্ষপতি দিদি মিশনে ১.৫ কোটির বেশি মহিলা স্বনির্ভর হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা স্কিম ও স্বনিধি স্কিমের মাধ্যমে কারিগর ও হকারদের মূলধারার অর্থনীতিতে যুক্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “গত ১০ বছরে ২৫ কোটির বেশি মানুষ দারিদ্রসীমা থেকে বেরিয়ে এসেছেন, যা কর্মসংস্থানের সুযোগ ছাড়া সম্ভব হতো না।”
শেষে প্রধানমন্ত্রী নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের উদ্দেশে বলেন, “‘নাগরিক দেবো ভবঃ’—এই ভাবনায় অনুপ্রাণিত হয়ে আপনারা নতুন শক্তি নিয়ে দেশসেবায় এগিয়ে যান।” এই রোজগার মেলা ভারতের যুবশক্তিকে ক্ষমতায়নের পাশাপাশি উন্নয়নের মহাযজ্ঞে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হল।