নিউজ ডেস্ক || ধলাই জেলার মনুতে নতুন ১৩২ কেভি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের উদ্বোধন করলেন ত্রিপুরার বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ। এই উপকেন্দ্র চালুর ফলে মনু, ছৈলেংটা, এসকে পাড়া, ধুমাচড়া, মাছলি, ৮২ মাইল, নেপাল টিলা, ছামনু, বাগছড়া, মানিকপুর, থালছড়া-সহ প্রায় ২১,৫৫৪ পরিবার নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকার আগামী দুই মাসের মধ্যে সমস্ত সরকারি দফতরকে সৌরশক্তির আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, “বিদ্যুৎ ছাড়া আধুনিক জীবন অচল। বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি রাজ্যের উন্নতির সূচক।” তিনি জানান, ২০১৮ সালের আগে রাজ্যে বিদ্যুৎ ভোক্তা ছিল ৭.২১ লক্ষ, যা বর্তমানে বেড়ে ১০.৩৮ লক্ষে পৌঁছেছে। অবকাঠামোর ক্ষেত্রেও অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। ১৩২ কেভি সাব-স্টেশনের সংখ্যা ১২ থেকে বেড়ে ২০টি হয়েছে, আরও দুটি নির্মাণাধীন। ৩৩ কেভি সাব-স্টেশন ৪৪ থেকে বেড়ে ৭৫টি হয়েছে, আরও ১৮টি তৈরি হচ্ছে। আন্ডারগ্রাউন্ড ক্যাবলের দৈর্ঘ্য ৯৫ কিমি থেকে বেড়ে ৫৭১ কিমি হয়েছে।
গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, “গ্যাসের মজুদ সীমিত, তাই সৌরশক্তির উপর নির্ভরতা বাড়াতে হবে।” ২০১৮ সালের আগে রাজ্যে মাত্র ৩ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপন্ন হতো। গত সাত বছরে তা বেড়ে ২৯ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে। আগামী দুই বছরে ৫০ হাজার বাড়িতে সৌরপ্লেট বসিয়ে ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও সৌরশক্তির প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। এটিই ভবিষ্যৎ।”
মন্ত্রী গ্রাহকদের উদ্দেশে বলেন, নতুন ইলেকট্রনিক যন্ত্র ব্যবহার শুরু করলে বিদ্যুৎ দপ্তরকে জানানো উচিত। এতে ট্রান্সফরমারের ক্ষমতা বাড়িয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখা সম্ভব হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা উপজাতি স্বশাসিত জেলা পরিষদের এমডিসি বিমলকান্তি চাকমা, সঞ্জয় দাস, বিধায়ক পল দাংশু, শম্ভুলাল চাকমা, জেনারেল ম্যানেজার (ট্রান্সমিশন), সমাজসেবী সঞ্জিত দেববর্মা, রতীশ ত্রিপুরা, অভিজিৎ ত্রিপুরা এবং জয়বাহাদুর রুপিনি।
ত্রিপুরা বিদ্যুৎ দপ্তরের এই উদ্যোগ রাজ্যের বিদ্যুৎ অবকাঠামো ও সৌরশক্তির ব্যবহারে নতুন মাইলফলক স্থাপন করছে, যা রাজ্যের উন্নয়নের পথকে আরও সুগম করবে।