কেরলে আগাম বর্ষার প্রবেশ: কৃষিক্ষেত্রে আশার আলো
নিউজ ডেস্ক || শনিবার, ২৩ মে, ২০২৫, কেরলে বর্ষার আগমন ঘটেছে, যা নির্ধারিত সময়ের আট দিন আগে এবং গত ১৬ বছরের মধ্যে সবচেয়ে তাড়াতাড়ি। ভারতের মৌসম ভবন জানিয়েছে, সাধারণত ১ জুন কেরলে বর্ষা প্রবেশ করে, কিন্তু এবার নিম্নচাপ এবং মৌসুমী বায়ুর অনুকূল পরিবেশের ফলে ২৩ মে-ই বর্ষা শুরু হয়েছে। এর আগে ২০০১ এবং ২০০৯ সালেও একই দিনে বর্ষা প্রবেশ করেছিল। ঐতিহাসিকভাবে, ১৯১৮ সালে ১১ মে সবচেয়ে আগে এবং ১৯৭২ সালে ১৮ জুন সবচেয়ে দেরিতে বর্ষা এসেছিল।
গত কয়েক দিনে কেরলের বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা মৌসুমী বায়ুর অগ্রগতি এবং নিম্নচাপের প্রভাবের ফল। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় কেরল, উপকূলীয় কর্ণাটক, কনকণ ও গোয়ায় বিক্ষিপ্তভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ২৫ থেকে ২৯ মে পর্যন্ত কেরল ও উপকূলীয় কর্ণাটকে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশেও আগামী পাঁচ দিন বৃষ্টি ও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তবে, ত্রিপুরায় বর্ষার প্রবেশের বিষয়ে এখনও কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি আবহাওয়া দপ্তর।
বর্ষার এই আগমন ভারতের কৃষিক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, যা গ্রামীণ অর্থনীতির মেরুদণ্ড। সময়মতো বৃষ্টিপাত ভূগর্ভস্থ জলের স্তর উন্নত করবে, জলাশয় ভরাট করবে এবং ধান, ডাল, তৈলবীজ, তুলা ও শাকসবজির মতো খরিফ ফসলের আগাম বপনে সহায়তা করবে। এটি খাদ্য নিরাপত্তা ও গ্রামীণ আয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তবে, আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, বর্ষার প্রকৃত প্রভাব নির্ভর করবে আগামী সপ্তাহগুলোতে এর অগ্রগতি কতটা স্থিতিশীল ও সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে তার উপর। যদি জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে মধ্য ও উত্তর ভারতে বর্ষা সমানভাবে বিস্তার লাভ করে, তবে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, যা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
বর্ষার এই আগাম আগমন কৃষকদের জন্য আশার বার্তা বহন করলেও, এর সুফল পেতে হলে সারা দেশে বৃষ্টিপাতের সমান বণ্টন অত্যন্ত জরুরি।