নিউজ ডেস্ক || আগামী শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে ত্রিপুরা বিধানসভার ১৩তম অধিবেশনের অষ্টম পর্ব, যা চলবে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। সংক্ষিপ্ত এই অধিবেশন শারদীয়া দুর্গাপূজা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ২২ সেপ্টেম্বর রাজ্য সফরের কারণে কিছুটা সীমিত করা হয়েছে। তবে রাজনৈতিক দিক থেকে এই অধিবেশন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
স্পিকারের অসুস্থতার কারণে এবার সভাপতিত্ব করবেন ডেপুটি স্পিকার রাম প্রসাদ পাল। এই প্রশাসনিক সিদ্ধান্তকে বিরোধীরা সাধারণভাবে গ্রহণ করেছে। অধিবেশনের প্রথম দিন প্রশ্নোত্তর পর্বের পর চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিল উপস্থাপন করবে সরকার। এর মধ্যে ত্রিপুরা রাজ্য পণ্য ও পরিষেবা কর বিল এবং ত্রিপুরা জনবিশ্বাস সংশোধনী বিল বিশেষভাবে আলোচিত হবে। এই বিলগুলি কর কাঠামো ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার বার্তা সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ী সমাজের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার।
এছাড়া, কারখানা (দ্বিতীয় সংশোধনী) বিল, ২০২৫ এবং ত্রিপুরা দোকান ও স্থাপনা (সপ্তম সংশোধনী) বিল শ্রম আইন ও কর্মপরিবেশের উন্নতির দিকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই বিলগুলি সরকারের জন্য রাজনৈতিক সুবিধা আনতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, রাজ্যের কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের নজর রয়েছে অষ্টম বেতন কমিশন এবং বকেয়া মহার্ঘ ভাতা ও মহার্ঘ রিলিফ নিয়ে সরকারের সম্ভাব্য ঘোষণার দিকে। শুক্রবারের অধিবেশন তাদের জন্য ‘স্বপ্ন পূরণের দিন’ হয়ে উঠতে পারে বলে জল্পনা চলছে।
বিরোধী দলগুলির জন্য এই অধিবেশনে কার্যকর ভূমিকা রাখা চ্যালেঞ্জিং হবে, কারণ ক্ষমতাসীন দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা তাদের প্রস্তাবের প্রভাব কমিয়ে দেয়। প্রধান বিরোধী দল সিপিআই(এম) প্রস্তাব আনলেও তা আলোচনার কেন্দ্রে আসবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে, বিরোধীদের কণ্ঠস্বর সংসদীয় রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত হওয়াটাই তাদের কাছে বড় অর্জন।
২৩ সেপ্টেম্বর অধিবেশনের শেষ দিনে নতুন প্রস্তাবিত আইন নিয়ে আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটবে। এই পর্বে সরকার তাদের উন্নয়নমূলক ও প্রশাসনিক বার্তা তুলে ধরবে, অন্যদিকে বিরোধীরা শ্রম আইন, কর কাঠামো ও স্বচ্ছতার বিষয়ে সরকারকে আক্রমণ করার চেষ্টা করবে।
প্রধানমন্ত্রীর সফর ও দুর্গাপূজার প্রাক্কালে এই অধিবেশন সরকারের জন্য জনমনে উৎসাহ জাগানোর সুযোগ। তবে বিরোধীরা এটিকে সরকারের ‘গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এড়ানোর কৌশল’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করবে। সংক্ষিপ্ত হলেও, ত্রিপুরার রাজনৈতিক মঞ্চে এই অধিবেশন যথেষ্ট তাৎপর্য বহন করছে।