এক কোটি গাছ: পজিটিভ বার্তার সবুজ বিপ্লব ভারতের ভবিষ্যৎ গড়ছে

3 Min Read

“একটি গাছ, একটি প্রতিশ্রুতি — সবুজ ভারতের স্বপ্ন”

নিউজ ডেস্ক || আজ কনস্টিটিউশন ক্লাব অফ ইন্ডিয়ার গ্র্যান্ড হল গর্ব, আশা এবং দৃঢ়তার সুরে মুখরিত হয়ে উঠল, যখন পজিটিভ বার্তা আয়োজিত জাতীয় সচেতনতা সম্মেলন জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইয়ে এক ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হল। মাত্র এক বছরে, একটি সাহসী স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে — দেশজুড়ে এক কোটি গাছ রোপণ। যা অসম্ভব মনে হয়েছিল, তা আজ এক নীরব বিপ্লবে পরিণত হয়েছে, যেখানে কৃষক, উদ্যমী ছাত্র, গ্রামীণ অর্থনীতির নতুন দিশারী নারী উদ্যোক্তা এবং অগণিত স্বেচ্ছাসেবী একসঙ্গে চারাগাছকে স্থিতিস্থাপকতার প্রতীকে রূপান্তরিত করেছেন।
পজিটিভ বার্তার প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ড. মলয় পিট বলেন, “এটি কেবল একটি পরিসংখ্যান নয়, এটি হৃদয়ের একটি আন্দোলন। প্রতিটি গাছ আমাদের সাহস, করুণা এবং আগামী প্রজন্মের প্রতি প্রতিশ্রুতির সাক্ষী।” সম্মেলনে বিশেষভাবে উঠে এসেছে নারী-নেতৃত্বাধীন বীজ ব্যাঙ্ক, ইকো-ব্যবসা এবং কমিউনিটি উদ্যোগের অসাধারণ অধ্যায়। এই নারীরা কেবল পরিবারের জীবিকা নিশ্চিত করেননি, গ্রামগুলিকে সবুজ অভয়ারণ্যে রূপান্তরিত করেছেন। ড. পিট জোর দিয়ে বলেন, “এই নারীরা জীবিকা ও প্রকৃতির সত্যিকারের রক্ষক।”
সম্মেলনে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের সমাগম ঘটে। ড. অয়নজিৎ সেন (প্রশিক্ষক ও শিক্ষাবিদ), ড. পরিমল কান্তি মণ্ডল (জাতীয় কৌশলবিদ), সন্দীপ ভার্মা (সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা), বৈভব পরাশর (কর্পোরেট নেতা) এবং ড. সুরেশ সিংভি (স্বাস্থ্যসেবা পথিকৃৎ) তাঁদের বক্তব্যে জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় সরকার, শিক্ষা, শিল্প, স্বাস্থ্যসেবা এবং নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের গুরুত্ব তুলে ধরেন। প্রখ্যাত সাংবাদিক মুকেশ কৌশিক, এস.এইচ. শামস, বিস্বেন্দু ভট্টাচার্য এবং আরতি রাই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দেন।
হাজার হাজার তরুণ স্বেচ্ছাসেবী তাঁদের গল্প শেয়ার করে এই সম্মেলনকে এক আবেগময় উৎসবে রূপান্তরিত করেন। একজন ছাত্র বলেন, “আমার প্রথম চারা রোপণ করা যেন একটি প্রার্থনা ছিল। এটি বেড়ে ওঠা দেখে আমি বুঝতে পারি, আমি নিজের চেয়ে অনেক বড় কিছুর অংশ।”
সম্মেলন কেবল করতালিতে শেষ হয়নি; এটি একটি নতুন আহ্বানের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়েছে। পজিটিভ বার্তা তাদের গ্রিন মিশনের সম্প্রসারণ ঘোষণা করেছে — স্কুল, প্রতিষ্ঠান এবং নতুন সম্প্রদায়কে পরিবেশগত পুনর্জননের একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ চক্র তৈরির জন্য অনুপ্রাণিত করার একটি দৃষ্টিভঙ্গি।
এটি কেবল একটি ইভেন্ট ছিল না। এটি ছিল লক্ষ লক্ষ সাধারণ ভারতীয়দের প্রতি একটি শ্রদ্ধাঞ্জলি, যাঁদের হাত মাটি স্পর্শ করেছে, যাঁদের সাহস চারাগাছ লালন করেছে এবং যাঁদের আশা আজ ভারতের ভবিষ্যৎকে নতুন রূপ দিচ্ছে। পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতার এই সময়ে, সম্মেলনটি একটি জোরালো সত্য তুলে ধরেছে: পৃথিবীকে সুস্থ করার শক্তি কেবল নীতির মধ্যে নয়, মানুষের সম্মিলিত হৃদস্পন্দনের মধ্যে নিহিত।

প্রতিটি চারা এখন আর কেবল একটি গাছ নয়।
এটি একটি প্রতিশ্রুতি। একটি সবুজ বিপ্লব।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version