কুমারী পূজায় ভক্তির জোয়ার আনন্দময়ী আশ্রমে

By onlinenews tripura 2 Min Read

নিউজ ডেস্ক || বিগত বছরের ন্যায় এবছরও সমস্ত শাস্ত্রীয় বিধি মেনে আগরতলার আনন্দময়ী আশ্রমে অনুষ্ঠিত হয়েছে কুমারী পূজা। বাসন্তী পূজার দ্বিতীয় দিনে মহা অষ্টমী তিথিতে এই পুজোকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই মন্দিরে ভক্তদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। এই পুজোর মাধ্যমে দেবী দুর্গার কুমারী রূপের আরাধনা করা হয়, যা পৌরাণিক কাহিনী ও আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের গভীর সংযোগ বহন করে।

পৌরাণিক কথা অনুসারে, একদা দুর্ধর্ষ অসুর বানাসুর স্বর্গ, মর্ত ও পাতাল দখল করেছিল। বিপন্ন দেবগণের আহ্বানে দেবী দুর্গা কুমারী রূপে পুনর্জন্ম নিয়ে বানাসুরকে বধ করেন। সেই থেকে মর্ত্যে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়। প্রথা অনুযায়ী, দুর্গাপূজার অষ্টমী তিথিতে একটি শিশুকন্যাকে স্নান করিয়ে, মাতৃমূর্তির মতো সাজিয়ে দেবী দুর্গার সামনে বসানো হয়। তাকে দেবী রূপে পূজা করা হয় এবং দেবীকে নিবেদিত ভোগ তার উদ্দেশ্যেও অর্পণ করা হয়। পুজো শেষে তার পায়ে ফুল দিয়ে প্রণাম করা হয়।

এই বছর আনন্দময়ী আশ্রমে ৬ বছর বয়সী বেদান্তিক চক্রবর্তীকে কুমারী মা হিসেবে পূজা করা হয়। কলেজিটিলা এলাকার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীর কন্যা বেদান্তিককে মায়ের আসনে অধিষ্ঠিত করে ভক্তরা শ্রদ্ধাভরে আরাধনা করেন। পুরোহিত জানিয়েছেন, প্রতি বছর মহা অষ্টমী তিথিতে এই আশ্রমে কুমারী পূজার আয়োজন করা হয়। এই পুজোয় জাতি, ধর্ম, বর্ণের কোনও ভেদাভেদ নেই। যে কোনও কুমারীকেই দেবী রূপে পূজিত করা হয়।

এই পুজোর উদ্দেশ্য ত্রিদেবী—দুর্গা, লক্ষ্মী ও সরস্বতীকে তুষ্ট করা। বিশ্বাস করা হয়, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের তিনটি শক্তি কুমারীর মধ্যে বীজাকারে নিহিত থাকে। প্রাচীনকালে মুনি-ঋষিরা মনে করতেন, মানুষের মধ্যেই ঈশ্বরের প্রভাব রয়েছে। শিশু কুমারীদের মন সৎ ও কলুষতামুক্ত হওয়ায় তাদের এই পুজোর জন্য বেছে নেওয়া হয়। এই পুজো কল্যাণ, সুখ ও সমৃদ্ধি বয়ে আনে বলে বিশ্বাস করা হয়।

আজ সকাল থেকেই আনন্দময়ী আশ্রমে ভক্তদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে। পুজোর এই পবিত্র পরিবেশে ভক্তরা দেবীর কৃপা লাভের আশায় মগ্ন হয়ে পড়েন।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version