নিউজ ডেস্ক || সকালে উত্তরাখণ্ডের কেদারনাথ থেকে গুপ্তকাশীগামী একটি বেসরকারি হেলিকপ্টার দুর্গম গৌরীকুণ্ড-খার্ক পাহাড়ি অঞ্চলে বিধ্বস্ত হয়ে সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ছয়জন তীর্থযাত্রী ও একজন পাইলটসহ মোট সাতজন প্রাণ হারিয়েছেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ঘন কুয়াশা ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে পাইলট দৃশ্যমানতা হারিয়ে ফেলেন, যার ফলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনাস্থল গৌরীমাই খার্ক এলাকায়, গৌরীকুণ্ড থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি দুর্গম ট্রেকিং পথে। দুর্ঘটনার পরপরই রাজ্যের SDRF ও প্রশাসনের উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ধ্বংসস্তূপ থেকে সকল মৃতদেহ উদ্ধার করে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন পাইলট রাজবীর সিং চৌহান, মহারাষ্ট্রের শ্রদ্ধা রাজকুমার জয়সওয়াল ও তার দুই বছরের সন্তান কাশি, গুজরাটের রাজকুমার সুরেশ জয়সওয়াল, উত্তরাখণ্ডের বিক্রম সিং রাওয়াত এবং উত্তরপ্রদেশের বিনোদ দেবী (৬৬) ও তুষ্টি সিং (১৯)। হেলিকপ্টারটি আর্যন এভিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেড দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিল এবং সকাল ৫:৩০ নাগাদ কেদারনাথ থেকে যাত্রা শুরু করেছিল।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি রাজ্যের প্রধান সচিবকে হেলিকপ্টার পরিষেবার বর্তমান প্রোটোকল পর্যালোচনা করে কঠোর এসওপি প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছেন। এই নতুন নির্দেশিকায় প্রতিটি উড়ানের আগে আবহাওয়া বিশ্লেষণ, হেলিকপ্টারের প্রযুক্তিগত পরীক্ষা এবং শুধুমাত্র অভিজ্ঞ পাইলটদের দুর্গম হিমালয় অঞ্চলে উড়ানের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি জোর দেওয়া হবে। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে রাজ্যে রোববার ও সোমবার সব হেলিকপ্টার পরিষেবা স্থগিত রাখা হয়েছে।
এই বছরের মে মাসে উত্তরকাশীর গঙ্গোত্রী যাত্রাপথে একটি অনুরূপ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছিল। বারবার এমন প্রাণঘাতী ঘটনা রাজ্যের হেলিকপ্টার পরিষেবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলছে। এখন ভুক্তভোগী পরিবার ও গোটা দেশ অপেক্ষায় রয়েছে, নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা কার্যকরভাবে কার্যকর হয় এবং ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা রোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়।