ক্রীড়ামন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলন: আন্তর্জাতিক যোগা দিবস ও সামাজিক সুরক্ষা উদ্যোগের ঘোষণা

3 Min Read

নিউজ ডেস্ক || আগরতলার সচিবালয়ের প্রেস কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায় আগামী ২১শে জুন আন্তর্জাতিক যোগা দিবসের রাজ্যব্যাপী আয়োজন এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তরের একাধিক নতুন উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেন।

এ বছরের আন্তর্জাতিক যোগা দিবসের মূল ভাবনা (থিম) হলো ‘এক পৃথিবী এক স্বাস্থ্য’। এই উপলক্ষে রাজ্যভিত্তিক মূল অনুষ্ঠানটি আগরতলার হাঁপানিয়াস্থিত আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী হলে অনুষ্ঠিত হবে এবং এর উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক (ডা.) মানিক সাহা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে সারা ভারতে এক লক্ষ জায়গায় যোগা দিবস উদযাপন এবং এক হাজার যোগা পার্ক তৈরির পরিকল্পনার কথাও মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

রাজ্যভিত্তিক এই অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা পুলিশ, বিএসএফ, সিআরপিএফ, টিএসআর, এনসিসি, এনএসএস, বিভিন্ন বিদ্যালয়ের স্কাউটস অ্যান্ড গাইডস, সমাজসেবী সংস্থা, যোগা সংস্থা এবং বিভিন্ন দপ্তরের কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করবেন। এই উপলক্ষে একটি মেগা রক্তদান শিবিরেরও আয়োজন করা হবে। রাজ্যের সমস্ত জেলা, মহকুমা ও ব্লক স্তরেও একই সাথে যোগা দিবস পালিত হবে। এছাড়াও, ঊনকোটি প্রাঙ্গণকে রাজ্যভিত্তিক আইকনিক স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে, যেখানেও যোগা দিবসের অনুষ্ঠান হবে। এর আগের দিন, অর্থাৎ ২০শে জুন, স্বচ্ছ ভারত অভিযান ও যোগাসন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।

সাংবাদিক সম্মেলনে মন্ত্রী রায় সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন:

  • দিব্যাঙ্গজনদের জন্য সামাজিক ভাতা: ১০ বছর বা তার বেশি বয়সী, ৬০ শতাংশের অধিক দিব্যাঙ্গতাযুক্ত এবং যাদের পারিবারিক বার্ষিক আয় সর্বাধিক ১ লক্ষ টাকা, তাদের সামাজিক সুরক্ষা ভাতার আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। 9 গত ডিসেম্বর মাসে ২৫৩৭ জন দিব্যাঙ্গজনকে এই ভাতার অনুমোদন দেওয়া হয় এবং এই মাসে দ্বিতীয় ধাপে আরও ৬৫৮ জনের আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।
  • ক্যান্সার রোগীদের জন্য সামাজিক ভাতা: ক্যান্সার রোগীদের ১০০ শতাংশ সামাজিক ভাতা প্রদানের লক্ষ্যে গত ১লা মে অটল বিহারী বাজপেয়ী রিজিওন্যাল ক্যান্সার হসপিটালে একটি হেল্প ডেস্ক চালু করা হয়। এর মাধ্যমে জমা পড়া ১১৮টি আবেদনপত্রের অনুমোদন দিয়ে ভাতা চালু করা হয়েছে।
  • ওয়ান স্টপ সেন্টার: কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদনক্রমে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় একটি করে ওয়ান স্টপ সেন্টার চালু আছে। সম্প্রতি, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রক আগরতলা ও কৈলাসহরে আরও দুটি নতুন ওয়ান স্টপ সেন্টার খোলার অনুমোদন দিয়েছে।
  • নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র: ত্রিপুরায় বর্তমানে ১০,২২২টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র চালু রয়েছে এবং মে মাসে নতুন ৫৩টি কেন্দ্র চালু হয়েছে। জনজাতিদের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ধরত্রী আবা জনজাতি গ্রাম উৎকর্ষ অভিযানে’র (ডিএজেজিইউএ) অধীনে আরও ১১৯টি নতুন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র খোলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার জন্য ১৪ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। পিএম-জনমন প্রকল্পে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে ১৪১টি এবং ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে আরও ৮৫টি নতুন কেন্দ্র খোলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যার জন্য ১০ কোটি ২০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। এই সমস্ত কেন্দ্র চালু হলে রাজ্যে মোট অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংখ্যা হবে ১০,৫৬৭টি এবং এতে ৩৪৫ জন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও ৩৪৫ জন সহায়িকার নতুন কর্মসংস্থান হবে।

এই সাংবাদিক সম্মেলনে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব ডা. পি কে চক্রবর্তী, সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তা তপন কুমার দাস এবং যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের অধিকর্তা সত্যব্রত নাথও উপস্থিত ছিলেন।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version