গোলাপী অটোর যুগে আগরতলা, শৃঙ্খলার নতুন পথে

3 Min Read

আগরতলায় অটোরিক্সার জন্য নতুন নিয়ম, গোলাপী রং ও কড়া নজরদারি

নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরা রাজ্য সরকার আগরতলা পুর নিগম এলাকায় চলাচলকারী অটোরিক্সাগুলিকে সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করতে নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে। মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান, পুর নিগম এলাকার সব অটোরিক্সার সামনের অংশ এখন থেকে গোলাপী রঙে রাঙানো হবে। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য, শহরের অটোরিক্সাগুলিকে অন্য মহকুমার অটো থেকে পৃথক করা এবং যানবাহনের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা।
মন্ত্রী জানান, প্রতিটি অটোকে তাদের রুট পারমিট স্পষ্টভাবে প্রদর্শন করতে হবে। নির্ধারিত পারমিটের বাইরে কোনও অটো চলাচল করতে পারবে না। তবে, চিকিৎসা বা বিমান যাত্রার মতো জরুরি প্রয়োজনে বাইরের অটোরা যথাযথ প্রমাণপত্র দেখিয়ে পুর নিগম এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে। নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ও পুনরাবৃত্তির ক্ষেত্রে জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
অটোরিক্সার চলাচল নিয়ন্ত্রণে ১৫ কিলোমিটারের সীমা কঠোরভাবে পালন করতে হবে। অন্য মহকুমার অটোরা যাতে অবৈধভাবে শহরে প্রবেশ করতে না পারে, তার জন্য চন্দ্রপুর, চম্পকনগর, হাওয়াইবাড়ী, সিধাই-মোহনপুর, শালবাগান, আমতলী ও বিশালগড়ে ১৩টি নাকা পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ ও পরিবহন দপ্তরের আধিকারিকরা নজরদারি চালাবেন।
এছাড়া, ব্যক্তিগত রেজিস্ট্রিকৃত ইকো, মারুতি বা অটো গাড়ি ব্যবহার করে স্কুল সাইনবোর্ড লাগিয়ে ছাত্রছাত্রী বা অফিস কর্মীদের পরিবহন সম্পূর্ণ বেআইনি। এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নোটিশ জারি করা হবে। মন্ত্রী জানান, শুধুমাত্র বাণিজ্যিক লাইসেন্সপ্রাপ্ত
গাড়িগুলিই এই কাজে ব্যবহার করা যাবে। এই নিয়ম নিরাপত্তার স্বার্থে কঠোরভাবে পালন করা হবে।
‘হিট অ্যান্ড রান’ দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে মন্ত্রী জানান, মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশ বা আইনানুগ প্রতিনিধি এবং আহতদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি অর্থ জমা দেওয়া হবে। ক্ষতিপূরণের জন্য নির্দিষ্ট অনলাইন ফর্মে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সহ আবেদন করতে হবে। আবেদন বাতিল হলে কারণ জানানো হবে। সংশ্লিষ্ট মহকুমা শাসক এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট জেলা শাসকের কাছে পাঠাবেন।
দুর্ঘটনাগ্রস্তদের সাহায্যে উৎসাহিত করতে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘রাহ-বীর’ (গুড সামারিটান) প্রকল্পের কথাও উল্লেখ করেন মন্ত্রী। এই প্রকল্প ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত চলবে। যাঁরা আহিদের তাৎক্ষণিক সহায়তা করবেন, তাঁডেও পুরস্কৃত করা হবে এবং কোনও আইনি জটিলতায় পড়তে হবে না। দুর্ঘটনার প্রথম এক ঘণ্টা বা ‘গোল্ডেন আওয়ার’-এর মধ্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হলে প্রাণ বাঁচানো সম্মভব হয় বলে সাধারণ নাগরিকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানান, এই নির্দেশিকার মাধ্যমে আগরতলায় যানবাহনের শৃঙ্খলা, জননিরাপত্তা এবং দায়িত্বশীল নাগরিকত্ব গঠনের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। শহরবাসীর সুবিধা ও নিরাপত্তায় এই উদ্যোগগ সফল হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version