ত্রিপুরায় সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে নতুন অস্ত্র: উদ্বোধন হলো রাজ্যের প্রথম সাইবার ক্রাইম থানা

2 Min Read

নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার অরুন্ধতীনগরে শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হলো রাজ্যের প্রথম সাইবার ক্রাইম থানা। মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা এই থানার উদ্বোধন করেন, যা রাজ্যে ক্রমবর্ধমান সাইবার অপরাধ মোকাবিলায় এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ত্রিপুরা তিন দিকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত দ্বারা বেষ্টিত। এই প্রেক্ষাপটে রাজ্য ড্রাগ ও মানব পাচারের করিডোরে পরিণত হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও সুদৃঢ় করতে হবে। উচ্চগতির ইন্টারনেট ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সাইবার অপরাধের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।” তিনি আরও জানান, “সাইবার ক্রাইমের সঙ্গে এখন সন্ত্রাসবাদও যুক্ত হচ্ছে। ভাইরাস ও হ্যাকারদের বিরুদ্ধে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্য সরকার ‘ট্রান্সফর্ম এবং পারফর্ম’ নীতির ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছে, যা সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

রাজ্য সরকারের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন বছরে ত্রিপুরার বিভিন্ন থানায় সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত মোট ১২৩টি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৯টি মামলা পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিতভাবে দায়ের করেছে। এই মামলাগুলির তদন্তে ৭৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র বিভাগ ও রাজ্য পুলিশের অপরাধ শাখার অধীনে একটি সাইবার অপরাধ ইউনিট গঠন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে, জেলা পর্যায়ে সাইবার অপরাধ সেল গঠনের মাধ্যমে এই অপরাধ মোকাবিলায় আরও পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

সাইবার অপরাধ-সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্তের জন্য পুলিশ মহানির্দেশকের অনুমোদনক্রমে এই ইউনিটে মামলা পাঠানো হয়। রাজ্য সরকার এই কাজে ১৫১ জন প্রশিক্ষিত আধিকারিক এবং ১১৩ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়োজিত করেছে। ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম রিপোর্টিং পোর্টালের সহযোগিতায় সাইবার ক্রাইম সেল হ্যাক হওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট মুক্ত করা, জালিয়াতির মাধ্যমে হারানো তহবিল পুনরুদ্ধার, সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর পোস্ট অপসারণ এবং অভিযোগ নথিভুক্তকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

নতুন এই সাইবার ক্রাইম থানা নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা। এই থানা রাজ্যে সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি শক্তিশালী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী এই উদ্যোগকে রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার একটি মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

এই নতুন থানা এবং সাইবার ক্রাইম সেলের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ত্রিপুরা সাইবার অপরাধের ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবিলায় আরও সক্ষম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version