নিউজ ডেস্ক || ত্রিপুরার উপজাতি জনসমাজের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত ত্রিপাক্ষিক চুক্তি বাস্তবায়নের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ভারত সরকার। আজ নয়াদিল্লীতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে তিপ্রা মথা নেতৃত্বের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তিপ্রা মথা সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ, সাংসদ কৃতি সিং দেববর্মণসহ অন্যান্য প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
গত ২ মার্চ ২০২৪-এ নয়াদিল্লীতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর উপস্থিতিতে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল ত্রিপুরার উপজাতি সম্প্রদায়ের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। এই চুক্তির শর্ত পূরণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার একটি কমিটি গঠন করেছিল, যার রিপোর্ট ইতিমধ্যে ভারত সরকারের কাছে জমা পড়েছে। আজকের বৈঠকে এই রিপোর্টের ভিত্তিতে আলোচনা হয় এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তিপ্রা মথা প্রতিনিধিদের চুক্তির শর্ত অবিলম্বে বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছেন।
বৈঠকের পর তিপ্রা মথা সুপ্রিমো প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ জানান, “দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে একমত। তিনি ত্রিপুরার উপজাতি সমাজের উন্নয়ন চান। রাজ্যের একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক অংশ আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। পাহাড়ি-বাঙালি বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা এই ষড়যন্ত্রের প্রমাণ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছি। ভারত সরকার এদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেবে।”
প্রদ্যোত কিশোর আরও বলেন, “যারা প্রচার করেছিল যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন না, তারা এখন কোথায়? ত্রিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে ত্রিপুরার জাতি-উপজাতি, পাহাড়ি-বাঙালি সকলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্ভব হবে।” তিনি দাবি করেন, চুক্তির আওতায় ১২৫তম সংবিধান সংশোধনী বিল অনুমোদন, এডিসিকে সরাসরি অর্থ প্রদান, ভাষা, ভূমি, শিক্ষা, অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থানের অধিকার, পানীয় জল, বিদ্যুৎ, হাসপাতাল এবং কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
তিনি রাজ্যের প্রভাবশালী রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে উদ্দেশ করে বলেন, “ক্ষমতার দম্ভে যা করা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। ত্রিপুরার ঐক্য ও উন্নয়নের পথে বাধা দেওয়া বন্ধ করুন।”
এই বৈঠক ত্রিপুরার উপজাতি সম্প্রদায়ের জন্য এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। ত্রিপাক্ষিক চুক্তির বাস্তবায়ন ত্রিপুরার সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে এক মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।