দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রযুক্তি ও সচেতনতার নতুন দিশা

3 Min Read

ত্রিপুরায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নতুন প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণের উদ্যোগ, মুখ্যমন্ত্রীর হাতে একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন

নিউজ ডেস্ক || দুর্যোগ পরবর্তী জীবন ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি এবং উদ্ধারকর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নের উপর জোর দিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। আজ সচিবালয়ের ২ নম্বর কনফারেন্স হলে রাজস্ব দপ্তরের একাধিক কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানের আবরণ উন্মোচন করেন এবং হাঁপানিয়ায় ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত টেকনোলজি ডেমোনস্ট্রেশন ইউনিট, সিভিল ডিফেন্স ট্রেনিং স্কিম, ২৬টি অটোমেটেড ওয়েদার স্টেশন, রেইন গজ, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ইক্যুইপমেন্ট ভেরিফিকেশন পোর্টাল এবং চেইঞ্জ অফ ল্যান্ড ইউজ পোর্টালের অনলাইন উদ্বোধন করেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান যুগ প্রযুক্তি ও এআই-এর যুগ। ত্রিপুরা অতীতে ২০২২ সালে সিত্রাং, ২০২৩ সালে মোচা এবং ২০২৪ সালে রেমাল ঘূর্ণিঝড়ের পাশাপাশি ২০১৮ ও ২০২৪ সালে বিধ্বংসী বন্যার সম্মুখীন হয়েছে। এই দুর্যোগগুলি আগাম প্রস্তুতির গুরুত্ব বারবার স্মরণ করিয়ে দেয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ত্রাণ শিবিরের ব্যবস্থাপনা আগে থেকে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। হাঁপানিয়ার টেকনোলজি ডেমোনস্ট্রেশন ইউনিটে হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যারা জরুরি পরিস্থিতিতে উদ্ধারকার্যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। এছাড়া, সিভিল ডিফেন্স ট্রেনিং স্কিমের আওতায় ২৮৮০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এই প্রকল্পে ত্রিপুরাকে নির্বাচিত করায় মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি আরও বলেন, সময়মতো সঠিক আবহাওয়ার পূর্বাভাস দুর্যোগ মোকাবিলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য রাজ্যে ২৬টি অটোমেটেড ওয়েদার স্টেশন এবং রেইন গজ স্থাপন করা হয়েছে। আগামী দিনে বিলোনিয়ায় ডপলার ওয়েদার রাডার স্টেশন স্থাপনের পরিকল্পনাও রয়েছে। নতুন ইক্যুইপমেন্ট ভেরিফিকেশন পোর্টালের মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবিলার সরঞ্জামের বর্তমান অবস্থা ও পরিমাণ ট্র্যাক করা সম্ভব হবে। এছাড়া, চেইঞ্জ অফ ল্যান্ড ইউজ পোর্টাল ভূমি রূপান্তর প্রক্রিয়াকে সহজ, স্বচ্ছ এবং ব্যবসাবান্ধব করে তুলবে।
মুখ্যমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, সংবাদমাধ্যম সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে এবং জনকল্যাণমূলক পদক্ষেপ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ায়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, দুর্যোগকালীন সময়ে গুজব ও আতঙ্ক রোধে সংবাদমাধ্যম তাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যসচিব বলেন, স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান কেবল একটি পরিকল্পনা নয়, এটি ত্রিপুরার প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রতিফলন। অনুষ্ঠানে পুলিশের মহানির্দেশক অনুরাগ, পিসিসিএফ আর কে শ্যামল, রাজস্ব সচিব ব্রিজেশ পান্ডে সহ বিভিন্ন দপ্তরের সচিব, জেলাশাসক ও অন্যান্য আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।
Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version