দেশে ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে করোনা, নতুন ভ্যারিয়েন্টে উদ্বেগ

3 Min Read

করোনার নতুন ঢেউ: দেশে ফের বাড়ছে সংক্রমণ, সতর্কতার আহ্বান স্বাস্থ্য মন্ত্রকের

নিউজ ডেস্ক ।। ভারতে ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণের ঢেউ। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে দেশে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ২৫৭ থেকে এক লাফে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,০০৯। গত কয়েকদিনে নতুন করে ৭৫২ জনের দেহে করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে। রাজধানী দিল্লিতে গত সপ্তাহে ৯৯ জন নতুন সংক্রমিত হয়েছেন, এবং বর্তমানে সেখানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১০৪।

স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্যে জানা গেছে, কেরালায় সর্বাধিক ৪৩০ জন সক্রিয় রোগী রয়েছে। এরপর রয়েছে মহারাষ্ট্র (২০৯), দিল্লি (১০৪), গুজরাট (৮৩), তামিলনাড়ু (৬৯), কর্ণাটক (৪৭), উত্তরপ্রদেশ (১৫), রাজস্থান (১৩), পশ্চিমবঙ্গ (১২) সহ অন্যান্য রাজ্য। তবে, ওড়িশা, উত্তরাখণ্ড, সিকিম, পাঞ্জাব, জম্মু-কাশ্মীর সহ বেশ কিছু রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এখনও কোনও সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়নি।

মহারাষ্ট্রে করোনায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, কেরালায় ২ জন এবং কর্ণাটকে ১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গত সপ্তাহে কেরালায় সবচেয়ে বেশি ৩৩৫ জন নতুন সংক্রমিত হয়েছেন, তারপর রয়েছে মহারাষ্ট্র (১৫৩), দিল্লি (৯৯) এবং গুজরাট (৭৬)।

স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ভারতে সম্প্রতি দুটি নতুন কোভিড ভ্যারিয়েন্ট—এনবি.১.৮.১ এবং এলএফ.৭—সনাক্ত হয়েছে। তামিলনাড়ুতে এনবি.১.৮.১ এর একটি এবং গুজরাটে এলএফ.৭ এর চারটি কেস ধরা পড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভ্যারিয়েন্টগুলিকে ‘পর্যবেক্ষণাধীন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। চিন ও এশিয়ার কয়েকটি দেশে এই ভ্যারিয়েন্টের কারণে সংক্রমণ বাড়ছে, তবে এগুলি পূর্ববর্তী ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় বেশি মারাত্মক নয় বলে জানা গেছে।

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা জানিয়েছেন, “সমস্ত হাসপাতাল পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত। আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।” তিনি বলেন, পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে এবং একটি অ্যাডভাইসরি জারি করা হয়েছে। বিহারের পটনায় চলতি ঢেউয়ের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছে এক ৩১ বছরের যুবকের দেহে। পটনার সিভিল সার্জন ডা. অভিনাশ কুমার সিংহ জানান, রোগীর উপসর্গ হালকা এবং চিকিৎসা চলছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রক সমস্ত হাসপাতালকে ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর সচল রাখতে এবং পজিটিভ নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। আইসিএমআর এবং আইডিএসপি-এর মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত অসুস্থতার নজরদারি চলছে। বেশিরভাগ রোগীর উপসর্গ হালকা এবং তারা বাড়িতে একান্তবাসে রয়েছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রক জনগণকে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সংক্রমণের এই নতুন ঢেউ মোকাবিলায় সতর্কতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Exit mobile version