নিউজ ডেস্ক || ৯ মাস ১৩ দিন মহাকাশে কাটানোর পর অবশেষে পৃথিবীতে ফিরলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নভোচারী সুনীতা উইলিয়ামস এবং তাঁর সহকর্মী বুচ উইলমোর। নাসা ও স্পেসএক্সের সহযোগিতায় পরিচালিত এই মিশনের সফল সমাপ্তির পর বুধবার ভোরে তাঁদের বহনকারী স্পেসএক্স ড্রাগন মহাকাশযানটি আমেরিকার ফ্লোরিডা উপকূলে নিরাপদে অবতরণ করে।
নাসার আনন্দ বার্তা: “বাড়িতে স্বাগত!”
নাসার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, স্পেসএক্স ক্রু-৯ এর সফল প্রত্যাবর্তন মানবজাতির জন্য এক নতুন মাইলফলক। নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক জ্যানেট পেট্রো বলেন, “সুনীতা, বুচ, নিক এবং আলেকজান্ডার নিরাপদে ফিরে আসায় আমরা রোমাঞ্চিত। এই মিশনের সাফল্যের জন্য রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের নির্দেশে নাসা ও স্পেসএক্স এক মাস ধরে কঠোর পরিশ্রম করেছে।”
বিজ্ঞান গবেষণায় যুগান্তকারী আবিষ্কার
এই ৯ মাসে সুনীতা উইলিয়ামস ও তাঁর দল ৯০০ ঘণ্টারও বেশি গবেষণার মাধ্যমে ১৫০টিরও বেশি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা পরিচালনা করেছেন। এর মধ্যে ছিল উদ্ভিদের বৃদ্ধি, রক্তের রোগ, অটোইমিউন ব্যাধি এবং ক্যান্সারের ওপর স্টেম সেল প্রযুক্তির প্রভাব সংক্রান্ত গবেষণা। তাঁরা মহাকাশচারীদের সার্কাডিয়ান ছন্দ বজায় রাখতে সাহায্যকারী আলোর পরীক্ষা এবং মহাকাশে অণুজীবের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নিয়েও গবেষণা করেন।
স্পেসওয়াক ও ঐতিহাসিক অবদান
মহাকাশে থাকাকালীন সুনীতা উইলিয়ামস দু’টি স্পেসওয়াক সম্পন্ন করেন। একটিতে সঙ্গী ছিলেন বুচ উইলমোর, অন্যটিতে নিক হেগ। এই অভিযানের মাধ্যমে বোয়িংয়ের স্টারলাইনার মহাকাশযানের সক্ষমতা পরীক্ষাও করা হয়।
ডলফিনদের অভ্যর্থনা ও জন্মস্থানে উদযাপন
পৃথিবীতে ফেরার পর ফ্লোরিডা উপকূলে তাঁদের মহাকাশযানটিকে একদল ডলফিন ঘিরে ধরে এক অসাধারণ দৃশ্যের জন্ম দেয়। অন্যদিকে, সুনীতার জন্মস্থান গুজরাটে এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত উদযাপন করা হয়।
ভারত সফরের আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সুনীতা উইলিয়ামসকে ভারত সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এক চিঠিতে তিনি লেখেন, “আপনি হাজার হাজার মাইল দূরে থাকলেও, আমাদের হৃদয়ের খুব কাছের। ভারতের জনগণ আপনার সুস্বাস্থ্য এবং সাফল্যের জন্য প্রার্থনা করেছে। আপনার ফিরে আসার পর আমরা ভারতে আপনার সঙ্গে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করছি।”
এই মিশনের মাধ্যমে সুনীতা উইলিয়ামস আবারও প্রমাণ করলেন যে, মহাকাশ গবেষণায় নারীর শক্তিশালী ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর এই সাফল্য ভবিষ্যৎ নভোচারীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।